Image description

রাজশাহীতে পুলিশের বরখাস্ত হওয়া উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুব হাসানকে (৩৫) গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। শনিবার রাত ১১টার দিকে নগরের হজোর মোড় এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। মাহবুব হাসানের বিরুদ্ধে নিরীহ মানুষকে হয়রানি করে টাকা আদায় এবং মিথ্যা মামলা দেওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

গণপিটুনির শিকার হওয়ার পর মাহবুব হাসান রক্তাক্ত অবস্থায় ছিলেন। এই ঘটনার পর জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী মহানগরীর সেক্রেটারি জসিম উদ্দিন সরকার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জনগণের উদ্দেশে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, 'এই সেই হাসান, যে মানুষকে কখনো গাঁজা, কখনো হেরোইন, কখনো ইয়াবা দিয়ে মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠাত।' জসিম উদ্দিন জানান, মাহবুব হাসান বিএনপি-জামায়াতের অসংখ্য নেতা-কর্মীকে হয়রানি করেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, জনগণ তাকে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে এবং তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তিনি আশা করেন, আদালত তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবে এবং কেউ যেন এই অপরাধীর পক্ষে অবস্থান না নেয়।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, মাহবুব হাসান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ছাত্রলীগ করতেন। ২০১৩ সালে এসআই হিসেবে তার চাকরি হয়। ডিবিতে যোগ দেওয়ার পর তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং সাধারণ মানুষের ওপর দমন-পীড়ন চালান। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি এবং মিথ্যা মামলার ফাঁদে ফেলে টাকা আদায়ের বহু অভিযোগ রয়েছে।

রেলগেট এলাকার রাজিব আলী রাতুলের বাবা মাসুদ রানা সম্প্রতি মাহবুব হাসানের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে সাদা পোশাকে মাহবুব হাসান মাসুদ রানার বাড়িতে গিয়ে তার ছেলে রাজিবকে তুলে নিয়ে যান এবং ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে ৫ লাখ টাকা আদায় করেন। টাকা নেওয়ার পরও রাজিবকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়, যার কারণে তাকে দীর্ঘ ১৬ মাস কারাভোগ করতে হয়েছে।

নগরের চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ জানান, আটকের পর মাহবুব হাসানকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং তাকে বোয়ালিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বোয়ালিয়া থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ জানান, তাদের থানায় মাহবুব হাসানের বিরুদ্ধে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজির একটি মামলা রয়েছে। এই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হবে এবং ভবিষ্যতে তার বিরুদ্ধে আরও কোনো মামলা পাওয়া গেলে সেগুলোতেও তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।