থামছে না ছাতক-ভোলাগঞ্জ রূপলাইনের যন্ত্রাংশ ও সাদা পাথর লুটপাট

বাংলাদেশ রেলওয়ের ছাতক-ভোলাগঞ্জ রূপলাইনের যন্ত্রাংশ ও ভোলাগঞ্জ বাঙ্কার থেকে কোটি কোটি টাকার সাদা পাথর লুটপাটের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত রয়েছে। এই অপরাধ বন্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত ১৬ বছরে পাথর ও যন্ত্রাংশ চুরির একাধিক ঘটনা ঘটলেও দোষীদের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য শাস্তিমূলক পদক্ষেপ দেখা যায়নি। সর্বশেষ ২০২৪ সালে ভোলাগঞ্জ বাঙ্কার থেকে সাদা পাথর লুটপাটের ঘটনায় রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি)-এর চার সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তবে, দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও জড়িতদের নাম প্রকাশ বা তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
২০১৭ সালে ভোলাগঞ্জকে পর্যটন স্পট ঘোষণার পর সাদা পাথরের জনপ্রিয়তা বাড়ে। ভারতের মেঘালয়ের খাসিয়া-জৈন্তিয়া পাহাড় থেকে আসা এই পাথর ভোলাগঞ্জের জিরো পয়েন্টে জমা হয়। তবে, রেলওয়ের বাঙ্কার থেকে এই পাথর প্রায়ই লুটপাট হচ্ছে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৬ আগস্ট রাতে ছাতকের উপ সহকারি কর্মকতা আব্দুল নুরসহ বাঙ্কারের পাহারার দায়িত্বে থাকা আরএনবি সদস্যদের ওপর দুর্বৃত্তরা হামলা করে তাদের মোবাইল ফোন,অর্থ ও অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উটে। এরপর ৭ আগষ্ট বাঙ্কার থেকে আরএনবি সদস্যদের প্রত্যাহার করা হয়। বাঙ্কারের স্টোর রুম, মসজিদের মাইক, ব্যাটারি, ফ্যানসহ বিভিন্ন মালামাল চুরি হয়েছে।
ব্রিটিশ আমলে ৩৫৯ একর জমিতে স্থাপিত এই রূপলাইন ১৯৬৪ সালে চালু হয়। ১১৯টি খুঁটি ও ৪২৫টি বাকেট নিয়ে গঠিত এই প্রকল্পটি ২০১৩ সালে বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে অযত্ন-অবহেলায় ট্রেসেল হেলে পড়ছে, তার ছিঁড়ে বাকেট মাটিতে পড়ে আছে। অভিযোগ রয়েছে, রেলওয়ের কিছু কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতারা এই লুটপাটে জড়িত।
স্থানীয় সাবেক ইউপি মেম্বার প্রয়াত নুরুল হক এ বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন বলেন, “সরকারি সম্পদ রক্ষায় অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু এখন চোখের সামনে লুটপাট দেখে কষ্ট লাগে।”
রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুন নূর অভিযোগ অস্বীকার করলেও চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফরের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয়রা মনে করেন, রূপলাইন পুনরায় চালু হলে পর্যটন ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা বাড়বে এবং সরকার বিপুল রাজস্ব আয় করতে পারবে।
Comments