
গাজীপুর মহানগরের পূবাইল থানা প্রাঙ্গণে হাঁটু পানি জমে থাকায় সাধারণ মানুষ ও পুলিশ সদস্যরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতের ফলে থানার পুরো আঙিনা পানিতে ডুবে গেছে। ফলে সেবাপ্রার্থীদের থানায় প্রবেশ থেকে শুরু করে সেবা গ্রহণ পর্যন্ত নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পুলিশ সদস্যদের দৈনন্দিন কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে এই জলাবদ্ধতার কারণে।
রবিবার (১৭ আগস্ট) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, থানার ভেতরের সড়ক ও প্রাঙ্গণ হাঁটু পানিতে তলিয়ে আছে। অভিযোগ জানাতে আসা নারী-পুরুষদের কাদামাটির পানি ভেঙে থানায় প্রবেশ করতে হচ্ছে। অনেকে জুতা হাতে নিয়ে হাঁটছেন, আবার কেউ কেউ ভেজা কাপড়েই থানায় প্রবেশ করছেন। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরাও একই সমস্যার সম্মুখীন। ডিউটি পরিবর্তন বা বিভিন্ন কক্ষে যাতায়াতের সময় তারা চরম দুর্ভোগে পড়ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পূবাইল থানায় দীর্ঘদিন ধরে পানি নিষ্কাশনের সঠিক ব্যবস্থা নেই। বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতেই থানার আঙিনায় পানি জমে যায়। একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানে এমন পরিস্থিতি অগ্রহণযোগ্য। থানায় সেবা নিতে এসে আমাদের পানি মাড়িয়ে যেতে হচ্ছে, যা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।”
পূবাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ আমিরুল ইসলাম বলেন, “পাশের মহাসড়কে আগে একটি কালভার্ট ছিল। ঢাকা সিটি বাইপাস সড়ক নির্মাণের সময় কালভার্টটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন থেকেই এই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা কোনোমতে সাইড দিয়ে থানায় প্রবেশ করতে পারলেও আশপাশের বাড়িঘরে পানি উঠে গেছে। আগে পানি নিষ্কাশন হতো, এখন তা বন্ধ। সিটি করপোরেশন যদি ড্রেনেজ ব্যবস্থা বা কালভার্ট নির্মাণ করে, তাহলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।”
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক কর্মকর্তা রুবাইয়া ইয়াসমিন বলেন, “আমি এই সমস্যার বিষয়ে জানতাম না। তবে এখন অবগত হওয়ার পর বিষয়টি দেখবো এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
পূবাইলের বাসিন্দা ও সেবাপ্রার্থীরা দ্রুত পানি নিষ্কাশনের স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানে এমন পরিস্থিতি কোনোভাবেই কাম্য নয়। স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী বলেন, “থানায় আসতে গিয়ে পানিতে ভিজে যেতে হচ্ছে। এটি শুধু আমাদের জন্যই নয়, পুলিশ সদস্যদের জন্যও কষ্টকর। সিটি করপোরেশনের উচিত দ্রুত ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা।”
জলাবদ্ধতার এই সমস্যা সমাধানে সিটি করপোরেশন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করছেন পূবাইলের বাসিন্দারা। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে থানার সেবার মান ও পুলিশের কার্যক্রম আরও ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
Comments