Image description

বান্দারবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের মুইয়ংপাড়া গর্জন ছড়া খালের ওপর নির্মিত একমাত্র সেতুটি ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে কাত হয়ে পড়েছে। গত সপ্তাহের টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সেতুর উত্তর পার্শ্ব ফেটে মূল কাঠামো থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে, এবং দক্ষিণ পার্শ্ব খালের সঙ্গে ধসে কাত হয়ে আছে। ফলে সেতুটি এখন কার্যত অচল, যা দশটি গ্রামের হাজারো মানুষের চলাচলের প্রধান পথ।

এই সেতু মুইয়ংপাড়া, রাবার বাগানপাড়া, বেলছড়ি, থুইলা অং পাড়াসহ অন্তত দশটি গ্রামের বাসিন্দাদের জন্য যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। প্রতিদিন শত শত স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থী এই পথে যাতায়াত করে। সেতুর বর্তমান অবস্থার কারণে কিশোর-কিশোরীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাচ্ছে। স্থানীয় অভিভাবকরা সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। বিকল্প পথ দূরবর্তী ও দুর্গম হওয়ায় তা ব্যবহারও কঠিন।

সেতুটি অচল হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা মারাত্মক বিপাকে পড়েছেন। ধান, চাল, ফলমূল ও শাকসবজি বাজারে নিতে না পারায় অনেক পণ্য পচে নষ্ট হচ্ছে। একজন কৃষক আক্ষেপ করে বলেন, “কষ্ট করে ফসল ফলাই, কিন্তু বাজারে নিতে না পারায় সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই সেতু আমাদের প্রাণ ছিল।”

মুইয়ংপাড়ার বাসিন্দা মাস্টার মংচাচিং, ডা. চিং থোয়াই মার্মা ও মইয়ং কারবারী বলেন, “এই সেতু ছাড়া আমাদের জীবনে স্বস্তি নেই। এটি কাত হয়ে যাওয়ায় পারাপার প্রায় অসম্ভব। বর্ষা মৌসুমে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।”

সেতুর ফলক অনুযায়ী, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তরের অর্থায়নে এটি নির্মিত হয়। এক যুগ না পেরোতেই এমন অবস্থায় পৌঁছানোয় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা দাবি করছেন, টেকসই সংস্কার না হলে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, “বাজেট পেলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেতু মেরামতের কাজ শুরু হবে।” তবে মুইয়া অং পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবদীন মিন্টু ও স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন, বাজেটের অপেক্ষায় থাকা বিপজ্জনক। তারা দ্রুত অস্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ না হলে বর্ষার পানির স্রোতে সেতুটি পুরোপুরি ভেসে যাওয়ার আশঙ্কার কথা জানান। তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।