
দীর্ঘ নয় সপ্তাহ ধরে চলা উর্ধ্বমুখী প্রবণতার পর গত সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজারে বড় ধরনের পতন ঘটেছে। ১০ থেকে ১৪ আগস্ট প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার দিনই সূচক, লেনদেন এবং বাজার মূলধন কমেছে। এতে টানা বৃদ্ধির পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা অনুযায়ী, গত সপ্তাহে দাম বেড়েছে মাত্র ৯৯টি প্রতিষ্ঠানের আর কমেছে ২৭৪টির। বাজার মূলধন কমেছে প্রায় ৩ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। টানা পতনের মুখে পড়েছে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স যা এক সপ্তাহে ৫৭.৯২ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩৫০ পয়েন্টে নেমে এসেছে। বিশেষ করে টানা তিন সপ্তাহ ধরে পতন হয়েছে শরিয়াহ সূচকের। অন্যদিকে, লেনদেনও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। গত সপ্তাহে ডিএসইতে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৬৮৯ কোটি টাকা যা তার আগের সপ্তাহের থেকে প্রায় ২৫ শতাংশ কম।
শেয়ারবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘ সময় ধরে বড় খাতগুলোর দাম বাড়ার পর এখন মুনাফা তুলে নিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। আন্তর্জাতিক বাজারের অস্থিরতা এবং নীতি-সংক্রান্ত অনিশ্চয়তাও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের সতর্কতা তৈরি করেছে। ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিমার মতো বড় খাতগুলো এই পতনের মূল কারণ।
তবে এর মধ্যে কিছু আশার আলোও দেখা গেছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (এসএমই) কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসএমইএক্স সূচক বেড়েছে ৩.২৯ শতাংশ। পাশাপাশি, সিরামিক, চামড়া, প্রকৌশল, বস্ত্র এবং খাদ্য খাতের কিছু কোম্পানি দাম বৃদ্ধির তালিকায় এসেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ঝুঁকি নিতে আগ্রহী বিনিয়োগকারীরা এখন কম দামি ও তুলনামূলকভাবে অবমূল্যায়িত শেয়ারের দিকে ঝুঁকছেন। তবে এটি বাজারের জন্য একটি ঝুঁকিপূর্ণ দিক। সামনের দিনগুলোতে বড় খাতগুলোর শেয়ারের দাম আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে বলে তারা আশা করছেন, তবে জ্বালানি খাতের নীতিগত অনিশ্চয়তা বাজারকে প্রভাবিত করতে পারে।
Comments