
সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) বাস মেরামতের নামে প্রায় ৪০ হাজার টাকা আত্মসাৎ ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভূমি) মো. মোজাহিদ খান এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলী এইচ এম তাইফ-উর আকবরের বিরুদ্ধে। এছাড়া, দুর্নীতির বিষয়ে প্রশ্ন তোলায় স্টোর কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমানকে গালিগালাজ ও মারধরের চেষ্টার অভিযোগও উঠেছে।
২০২৪ সালের অক্টোবরে মতিউর রহমান বাস মেরামতের ব্যয় যাচাই করতে গিয়ে কিছু পণ্যের দামে অসঙ্গতি লক্ষ্য করেন। নিজ উদ্যোগে বাজার থেকে কোটেশন সংগ্রহ করে তিনি দেখেন, জমা দেওয়া বিলে উল্লেখিত দামের সঙ্গে বাজার মূল্যের পার্থক্য রয়েছে। এরপর ৪ নভেম্বর তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন, যাতে প্রায় ৪০ হাজার টাকার দুর্নীতির উল্লেখ ছিল।
মতিউর রহমান জানান, “দামের অসঙ্গতি দেখে অভিযোগ করার পর ২০২৫ সালের ৫ মে মোজাহিদ খান আমার অফিসে এসে অকথ্য গালিগালাজ করেন এবং মারধরের চেষ্টা করেন। আমি নিজেকে রক্ষা করতে তার হাত চেপে ধরি।” তিনি বলেন, “তদন্ত কমিটি গঠন হলেও ন্যায়বিচারের আশা করছি। অন্যথায় উচ্চ পর্যায়ে অভিযোগ জানাব।”
ঘটনার পর ৮ মে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সভাপতি উপ-রেজিস্ট্রার আবু মুহাম্মদ মুকাম্মেল, সদস্য সচিব অর্থ বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. আহসানউল্লাহ এবং সদস্য বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবু রায়হান। ১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ থাকলেও দুই মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও প্রতিবেদন জমা পড়েনি, যা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে।
অভিযুক্ত মোজাহিদ খান বলেন, “বাস মেরামতের জন্য অতিরিক্ত যন্ত্রাংশ প্রয়োজন ছিল। ভিসি স্যারের নির্দেশে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করা হয়েছে। মতিউর ভাইয়ের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, পরে আমি ক্ষমা চেয়েছি।” তিনি দাবি করেন, ২৬ বছরের চাকরিতে তার বিরুদ্ধে এর আগে কোনো অভিযোগ ছিল না।
এইচ এম তাইফ-উর আকবর বলেন, “কম দামে পণ্য কিনেছি, সব কাগজপত্র প্রস্তুত আছে। মারধরের অভিযোগ মিথ্যা, আমি শুধু দুজনকে শান্ত করার চেষ্টা করেছি।”
তদন্ত কমিটির সভাপতি আবু মুহাম্মদ মুকাম্মেল জানান, “বাজেট ও ক্রয়ের অডিট চলছে। আমরা পক্ষপাতহীনভাবে প্রতিবেদন দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম, তবে এখনও সম্ভব হয়নি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, “উভয় পক্ষের বক্তব্য পেয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Comments