Image description

ভারতে বাংলা ভাষাকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি দিল্লির এক পুলিশ পরিদর্শক একটি চিঠিতে বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ হিসেবে উল্লেখ করলে এর প্রতিবাদে কলকাতার একটি ফুটবল ম্যাচের গ্যালারিতে ব্যানার প্রদর্শন করা হয়। এই ঘটনাটি কেন্দ্র করে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে।

বুধবার কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে ইস্টবেঙ্গল ও নামধারী ফুটবল ক্লাবের ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকেরা একটি বড় ব্যানার প্রদর্শন করেন।  "ভারত স্বাধীন করতে সেদিন পরেছিলাম ফাঁসি/মায়ের ভাষা বলছি বলে আজকে বাংলাদেশি।" এই ব্যানারটি সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের অনেক সমর্থকের শেকড় বাংলাদেশের সঙ্গে জড়িত। দেশভাগ ও উদ্বাস্তু জীবনের অভিজ্ঞতা তাদের ব্যক্তিগত ইতিহাসে গভীর ছাপ ফেলেছে। তাই তাদের এই প্রতিবাদ শুধু রাজনৈতিক নয়, ব্যক্তিগত আবেগকেও প্রতিফলিত করে।

দিল্লি পুলিশের একটি চিঠিতে এক পুলিশ পরিদর্শক বঙ্গভবনের (দিল্লিতে অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের অতিথি ভবন) এক কর্মকর্তাকে বাংলায় লেখা একটি নথির অনুবাদের জন্য অনুরোধ করেন। সেই চিঠিতেই তিনি বাংলাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি পুলিশের এই শব্দচয়নকে 'চরম লজ্জাজনক, অপমানজনক, দেশবিরোধী এবং সংবিধানবিরোধী' বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে, তাই এটি ভারতের সব বাংলাভাষী মানুষের অপমান।

বিজেপির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা মমতার অভিযোগকে 'ভুল, বিপজ্জনক ও উসকানিমূলক' বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, দিল্লি পুলিশ শুধু অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করার জন্য নির্দিষ্ট উপভাষা বা বাক্যগঠনের ভিন্নতাকে 'বাংলাদেশি' বলে উল্লেখ করেছে, যা বাংলাদেশের অফিসিয়াল বাংলা থেকে আলাদা।

এই ইস্যুটি নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক আরও তীব্র হচ্ছে, কারণ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারের ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রস্তাব নিয়েও তৃণমূল কংগ্রেস কেন্দ্রকে নিশানা করেছে।