Image description

বিশ্বের সবচেয়ে তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভোগা দেশগুলোর মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের পাঁচটি সংস্থা—এফএও, ইফাদ, ডব্লিউএফপি, ডব্লিউএইচও এবং ইউনিসেফ—একসঙ্গে প্রকাশিত 'গ্লোবাল রিপোর্ট অন ফুড ক্রাইসিস ২০২৫' শীর্ষক প্রতিবেদনে এই উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে। একই ধরনের আরেকটি পৃথক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)।

প্রতিবেদন দুটি থেকে জানা যায়, খাদ্য উৎপাদনের অগ্রগতি সত্ত্বেও দেশের ৭ কোটি ৭১ লাখ মানুষ এখনো স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পায় না। দেশের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশের বেশি মানুষ অপুষ্টির শিকার। যদিও সরকার পর্যাপ্ত খাদ্য মজুতের কথা জানাচ্ছে এবং এসব প্রতিবেদন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

'গ্লোবাল রিপোর্ট অন ফুড ক্রাইসিস ২০২৫' অনুযায়ী, বিশ্বের ৫৩টি সংকটাপন্ন দেশ ও অঞ্চলের প্রায় ২৯ কোটি ৫০ লাখ মানুষ চরম খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি। তীব্র খাদ্য অনিরাপত্তার শিকার মানুষের সংখ্যার দিক থেকে শীর্ষ পাঁচটি দেশ হলো নাইজেরিয়া, সুদান, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, বাংলাদেশ ও ইথিওপিয়া। জনসংখ্যার অনুপাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা, দক্ষিণ সুদান, সুদান, ইয়েমেন ও হাইতি। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গাজা উপত্যকার শতভাগ মানুষ চরম খাদ্য অনিরাপত্তার শিকার।

শুধু খাদ্যনিরাপত্তার সংকটেই নয়, স্বাস্থ্যকর বা সুষম খাদ্যের দিক থেকেও বাংলাদেশ পিছিয়ে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ৪৪ শতাংশের বেশি বা ৭ কোটি ৭১ লাখ মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার থেকে বঞ্চিত। তবে ২০১৭ সালের তুলনায় এ সংখ্যা কমেছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সুষম খাদ্যের অভাবে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বাংলাদেশ, যেখানে শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তান।

পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে অপুষ্টিজনিত ওজন কম থাকার হার বাংলাদেশে ১০ শতাংশ, যা ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে কম। তবে খর্বকায় শিশুদের হার ২৫ শতাংশ, যা ভারত ও পাকিস্তানের তুলনায় কিছুটা ভালো। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের ১০ শতাংশের বেশি মানুষ এখনো অপুষ্টির শিকার।

জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনগুলো নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিটের (এফপিএমইউ) সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। এফপিএমইউ'র মহাপরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, 'আমাদের যথেষ্ট খাদ্য আছে। কীভাবে বাংলাদেশকে তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীন দেশের তালিকায় রাখা হলো, তা নিয়ে আমরা জাতিসংঘের দপ্তরগুলোর সঙ্গে কথা বলব। খাদ্য পর্যাপ্ত থাকলেও তা হয়তো সবাই ঠিকমতো পাচ্ছে না, এটা হতে পারে।'

প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুষম খাদ্য কেনার জন্য বাংলাদেশে জনপ্রতি দৈনিক ব্যয় ৪.৪৯ ডলার, যা দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।