
গাজীপুরে চিকিৎসার অনুরোধ করায় ক্ষুব্ধ হয়ে অসুস্থ স্ত্রী সালমা বেগমকে (৪০) দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে মহানগরের পশ্চিম ধীরাশ্রম ফুলবাড়িয়া গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। স্ত্রীকে হত্যার পর মোস্তফা কামাল বসতঘরের মেঝেতে মরদেহ রেখে পাশেই বসে ছিলেন। পরে স্থানীয়রা তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
পুলিশ, এলাকাবাসী ও স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, প্রায় দশ বছর আগে ধীরাশ্রম ফুলবাড়িয়া গ্রামের করম আলীর মেয়ে সালমার সঙ্গে মোস্তফা কামালের (যার বাড়ি ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকায়) বিয়ে হয়। সালমা ছিলেন মোস্তফার দ্বিতীয় স্ত্রী। বুধবার রাতে সালমা অসুস্থতার কারণে স্বামীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এতে মোস্তফা ক্ষুব্ধ হন এবং এক পর্যায়ে দা দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করেন। হত্যার পর তিনি ঘরের দরজা ভেতর থেকে আটকে মরদেহের পাশে বসে থাকেন।
পাশের কক্ষে থাকা মেয়ের চিৎকারে আশপাশের মানুষ এসে মোস্তফাকে দরজা খুলতে বলেন। অনেক ডাকাডাকির পর মোস্তফা বলেন, "আমি আমার স্ত্রীকে মাইরা ফেলছি। দরজা খুললে আপনারা আমারে মাইরা ফেলবেন।" কিছু সময় পর তিনি দরজা খুলে দিলে স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে থাকা সালমাকে উদ্ধার করে দ্রুত শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরই মধ্যে স্থানীয়রা মোস্তফাকে আটক করে পুলিশে খবর দেন।
নিহত সালমা বেগমের মেয়ে মর্জিনা আক্তার জানান, "রাতে হঠাৎ মা চিৎকার করে বলতে থাকেন– মর্জিনা বাঁচা, আমারে মাইরা ফেলল। আমি পাশের রুম থেকে চিৎকার শুনে দ্রুত বের হয়ে দরজা খোলার জন্য ডাকাডাকি করি। কিন্তু বাবা দরজা খোলেনি। এর পর এলাকার লোকজনকে ডেকে আনি। তারা এসে আমার মাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। আমার মাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।"
গাজীপুর মহানগরের সদর থানার ওসি মেহেদী হাসান জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সালমা বেগমের মেয়ে মর্জিনা আক্তার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মোস্তফা কামালকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
Comments