জীবননগরে দুটি ব্রিজ ভেঙ্গে যাওয়ায় হাজার হাজার মানুষ ঘরবন্দী

ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে জীবননগর উপজেলার সিংনগর বাঁওড়ের বাঁধ ভেঙ্গে পানির প্রবল স্রোতে এবার ভেঙ্গে পড়েছে সন্তোসপুর গ্রামে প্রবেশের একমাত্র ব্রিজটি। অপরদিকে প্রবল স্রোতে গত সোমবার ভেঙ্গেছে ভৈরব নদীর ওপর মনোহরপুর গ্রামের একটি ব্রিজ।
মঙ্গলবার রাতে কোন এক সময় সন্তোসপুর বাসস্ট্যান্ডের নিকট ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সন্তোসপুরসহ মানিকপুর, রাজাপুর, রতিরামপুর, সিংনগর, ধোপাখালী ও মাধবখালী গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া, কৃষকদের কৃষি পণ্য ও ব্যবসায়ীদের মালামাল আনা নেওয়া একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। কর্মব্যস্ত মানুষজন অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই ভাঙ্গা ব্রিজের ওপর দিয়ে পায়ে হেটে চলাচল করছেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, ব্রিজের একটি অংশ ভেঙ্গে পড়ে গেছে। এছাড়াও ব্রিজের চারপাশে ফাটল দেখা দিয়েছে। যখন তখন ব্রীজটি সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ব্রিজটি ভেঙ্গে যাওয়ার খবর পেয়ে সরেজমিনে পরিদর্শনে করেন জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল-আমীন হোসেন।
এসময় তিনি বলেন, ভৈরব নদের পানির প্রবল স্রোতে দুইদিন আগে জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের একটি ব্রিজ ভেঙ্গে গেছে। আজকে আবার সন্তোসপুর গ্রামের ব্রিজটি ভেঙ্গে গেছে। ব্রিজটি এই এলাকার মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি পুননির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। তারা দ্রুতই এর একটা ব্যবস্থা করে দেবে। আর এখন মানুষ যেন যাতায়াত করতে পারে সেজন্য বিকল্প ব্যবস্থা কি করা যেতে পারে সে বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নেবো।
জীবননগর উপজেলা প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম বলেন, ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ার খবর পেয়ে দেখতে এসেছি। এ ব্রিজটি স্বাধীনতা যুদ্ধের পরপরই নির্মান করা। এটা আমাদের এলজিডি ডিপার্টমেন্ট থেকে করা ছিলো না। এটা পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে করা হয়েছে। এই ব্রীজের ওপর দিয়ে আমাদের একটা রাস্তা চলে গেছে।প্রাথমিকভাবে ব্রীজের যে অবস্থা দেখলাম তাতে করে এটা মেরামত যোগ্য না। নতুন করে ব্রীজ নির্মাণ করতে হবে। আমরা আমাদের ডিপার্টমেন্ট থেকে নতুন ব্রীজের জন্য প্রস্তাব পাঠাবো। তবে সময় লাগবে।
উথলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ব্রিজটি ভেঙ্গে যাওয়ায় প্রায় সাত থেকে আট গ্রামের মানুষ ঘরবন্দী হয়ে পড়েছে। স্কুল পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়া আজকে বন্ধ রাখা হয়েছে।
সন্তোষপুর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুস সাত্তার বলেন, ব্রিজটি আমাদের গ্রামসহ আরও সাত থেকে আটটি গ্রামের একমাত্র চলাচলের রাস্তা। আমরা ঘরবন্দী হয়ে পড়েছি। বিকল্প উপায়ে পারাপারের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কতৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানাচ্ছি।
Comments