Image description

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের 'রাজাকারের নাতিপুতি' ট্যাগ দিয়ে তাদের জন্য অমর্যাদাকর পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন।

বুধবার আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে নাহিদ ইসলাম বলেন, "১৪ জুলাই শেখ হাসিনা একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। আমাদের প্রত্যাশা ছিল তিনি আন্দোলনকারীদের পক্ষ নেবেন, কিন্তু তিনি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা এবং রাজাকারের নাতিপুতি অভিহিত করে কোটাপ্রথার পক্ষে অবস্থান নেন।" তিনি বলেন, এই বক্তব্যের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণের একটি বৈধতা দেওয়া হয়েছিল, কারণ অতীতেও সরকারবিরোধীদের রাজাকারের বাচ্চা আখ্যা দিয়ে আন্দোলন নস্যাৎ করা হতো।

নাহিদ ইসলাম জানান, শেখ হাসিনার মন্তব্যের প্রতিবাদে সেই রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসেন। ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করার পর নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের ওপর চাপ বাড়ানো হয়। তবে তারা স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে সরকারের সঙ্গে কোনো সংলাপ হবে না।

নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, ১৮ জুলাই সারাদেশে 'কমপ্লিট শাটডাউন'-এর ডাক দিলে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে আসেন, বিশেষ করে মাদরাসা ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনে যোগ দেন। তিনি বলেন, ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায় এবং ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরাও হামলায় অংশ নেয়। এই সহিংসতায় বহু মানুষ নিহত ও আহত হন।

তিনি বলেন, তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকার ছিল ফ্যাসিবাদী, যারা তিনবার জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ করেছে। তার দাবি, ২০১৮ সালেই তাদের সন্দেহ হয়েছিল যে শেখ হাসিনা সরকার প্রকৃতপক্ষে কোটা বাতিল করতে চায় না, বরং সুযোগ বুঝে তা ফিরিয়ে আনতে চাইছিল, যা ২০২৪ সালের নির্বাচনের পর বাস্তবায়িত হয়।