Image description

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রুরা আকাশপথে সোনা চোরাচালানে জড়িয়ে পড়ছেন। বিমানবন্দরে বারবার সোনাসহ ধরা পড়লেও লঘু শাস্তির মাধ্যমে পুনরায় চাকরিতে ফিরছেন তারা, যা প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।

সম্প্রতি, জ্যেষ্ঠ কেবিন ক্রু রুদাবা সুলতানা সৌদি আরবের রিয়াদ থেকে ঢাকায় ফিরে শাহজালাল বিমানবন্দরে ২৩০ গ্রাম সোনার চেইনসহ ধরা পড়েন। তিনি টিস্যু পেপারে সোনা লুকিয়ে স্ক্যানিং মেশিনের নিচে ফেলার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় গত ১২ আগস্ট তাকে বরখাস্ত করা হলেও, বিমানের দাবি, এটি প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে।

এর আগে, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে কেবিন ক্রু মর্জিনা আক্তার এলিন সোনার বারসহ ধরা পড়েন। তাকে সাময়িক বরখাস্তের পর বিভাগীয় মামলা করা হয়। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলেও, গত ২৮ আগস্ট দুটি বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বন্ধের শাস্তি দিয়ে তাকে পুনরায় চাকরিতে ফেরানো হয়। একইভাবে, ২০২৪ সালের ৬ অক্টোবর সোনার বারসহ ধরা পড়া কেবিন ক্রু সাদিয়া খানমকে গত ১৭ আগস্ট ‘তিরস্কার’ শাস্তি দিয়ে চাকরিতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিমানের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, তদন্তকারী কর্মকর্তারা উৎকোচ নিয়ে অভিযুক্তদের দায়মুক্তি দেন। কেবিন ক্রু ইউনিয়নের প্রভাবশালী নেতারাও এতে ভূমিকা রাখেন। এমনকি রুদাবা সুলতানার বিরুদ্ধে প্রভাবশালী মহলের হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে, যিনি কেবিন ক্রু ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া আবিরের বোন।

বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) এ বি এম রওশন কবির বলেন, “প্রতিটি অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হয়। অপরাধমূলক কার্যক্রমের ওপর বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বিমানের এমডি ও সিইও ড. সাফিকুর রহমান জানান, “বড় অপরাধে চাকরিচ্যুতি হতে পারে। তবে ছোটখাটো অপরাধে র‍্যাঙ্ক ডিমোশন বা বেতন বৃদ্ধি বন্ধের মতো শাস্তি দেওয়া হয়। নতুনদের ক্ষেত্রে প্রমোশন বা বেতন বৃদ্ধি এক বছর বন্ধ রাখা হয়। ভবিষ্যতে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এর আগে, ২০২৩ সালে কেবিন ক্রু জিয়াউল হাসান এবং ২০২২ সালে ফ্লোরা নামে এক ক্রু সোনা চোরাচালানে ধরা পড়ে চাকরিচ্যুত হন। তবে, লঘু শাস্তির প্রবণতার কারণে সোনা চোরাচালান বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।