Image description

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলের মরদেহ কবর থেকে তুলে পোড়ানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আলোচিত ইসলামী বক্তা মুফতী গিয়াস উদ্দিন তাহেরী। এ ঘটনাকে তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ও ন্যাক্কারজনক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

একটি ইসলামী মাহফিলে দেওয়া বক্তৃতায়, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, তাহেরী বলেন, “নুরাল পাগলা জীবিত থাকতে যদি কোনো অন্যায়, শিরক বা কুফরি করে থাকেন, তবে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু মৃত্যুর পর তার লাশ কবর থেকে তুলে পোড়ানো এবং ‘আল্লাহু আকবর’ স্লোগান দিয়ে উল্লাস করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।” তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, “আপনারা কেউ কি কখনো দেখেছেন, কবর থেকে মুসলমানের লাশ তুলে আগুনে পোড়ানো হয়েছে? এমন ইতিহাস কি বাংলাদেশে আছে?”

গত শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) গোয়ালন্দে ‘ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি’র বিক্ষোভ সমাবেশের পর তৌহিদী জনতা নুরাল পাগলের দরবারে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় তার মরদেহ কবর থেকে তুলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পদ্মার মোড়ে পেট্রোল ঢেলে পোড়ানো হয়। এ ঘটনায় সংঘর্ষে রাসেল মোল্লা (২৮) নামে একজন নিহত এবং অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।

অন্তর্বর্তী সরকার এ ঘটনাকে ‘অমানবিক ও বর্বর’ আখ্যা দিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জামায়াতে ইসলামী ও খেলাফত মজলিসও এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। গোয়ালন্দ ঘাট থানায় অজ্ঞাত ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, নুরুল হক গোয়ালন্দে দরবার শরীফ গড়ে তুলেছিলেন এবং নিজেকে ‘ইমাম মাহদি’ দাবি করেছিলেন। গত ২৩ আগস্ট তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। তার মরদেহ উঁচু বেদিতে দাফন করা নিয়ে স্থানীয় আলেম সমাজ ক্ষোভ প্রকাশ করে, যা এই সহিংসতার সূত্রপাত ঘটায়।