রাজবাড়ীতে নুরা পাগলের মরদেহে অগ্নি সংযোগ, মামলার আসামি সাড়ে ৩ হাজার

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নিজেকে ‘ইমাম মাহাদী (আ.)’ দাবিকারী নুরা ওরফে নুরাল পাগলের মৃত্যুর পর কবরস্থানকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হওয়া তীব্র উত্তেজনার জেরে বিক্ষুব্ধ জনতা তার কবর ভেঙে মরদেহ মহাসড়কে এনে আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে সাড়ে ৩ হাজার জনতার নামে মামলা দায়ের করেছে।
ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে। এ সময় উত্তেজিত জনতা নুরাল পাগলের বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের দুটি গাড়ি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়ি। সংঘর্ষে অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন। এর মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় তার অনুসারী মো. রাসেল মোল্লা (২৮) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ আগস্ট নুরাল পাগলের মৃত্যু হয়। পরে তার পরিবার বাড়ির সামনে প্রায় ১২ ফুট উঁচু কাঠামোর ভেতর কবর দেয় এবং সেটিকে কা’বা শরীফের আদলে ‘হযরত ইমাম মাহাদী (আ.) দরবার শরীফ’ লেখা ব্যানার টাঙায়। এ নিয়ে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ইমাম- আকিদা রক্ষা কমিটি তিন দফা দাবি তোলে, কবরের রঙ পরিবর্তন, সাইনবোর্ড অপসারণ ও কবরের উচ্চতা কমানো। প্রথম দুটি দাবি মানলেও কবরের উচ্চতা কমানো না হওয়ায় উত্তেজনা চরমে ওঠে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গেলেও বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পুনরায় সংঘর্ষ শুরু হলে প্রশাসনকে পিছু হটতে হয়। পরে উত্তেজিত জনতা মরদেহ কবর থেকে তুলে মহাসড়কে এনে আগুনে পুড়িয়ে দেয়।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদুল রহমান বলেন, “এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আমার গাড়িসহ পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেছে জনতা। পরে মরদেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে ফেলা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।”
শনিবার গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাকিবুল ইসলাম জানান, “সরকারি কাজে বাধাদান, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে সাড়ে ৩ হাজার জনতার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। নুরাল পাগলার দরবার শরীফের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে, আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।”
Comments