আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করেই মুক্তিযোদ্ধার শতাধিক গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ

মাদারীপুরে আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করেই মুক্তিযোদ্ধার শতাধিক গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশির বিরুদ্ধে। এতে পরিবারে বাড়ছে আতঙ্ক। মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার কাজীবাকাই ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামে শুক্র ও শনিবার দুইদিন ধরে এই কার্যক্রম।
ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম হাওলাদার ওই গ্রামের বাসিন্দা ও অভিযুক্ত প্রতিবেশি মৃত আব্দুল লতিফ কাজীর ছেলে শাহাদাৎ কাজী।
একাধিক সূত্র জানায়, ডাসার উপজেলার পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম হাওলাদারেরর সাথে প্রতিবেশি মৃত আব্দুল লতিফ কাজীর ছেলে শাহাদাৎ কাজীর সাথে জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। বিরোধপূর্ণ জমিতে গাছ কাটতে যায় শাহাদাৎ কাজী। মুক্তিযোদ্ধার পরিবার এর প্রতিবাদ জানালে কোন কর্ণপাত করেনি অভিযুক্ত। পরে কাশেম হাওলাদারের মেয়ে শিউলি আক্তার বাদী হয়ে গত ২৪ আগস্ট মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৫ ধারায় একটি অভিযোগ করেন। সেখানে উল্লেখ করা হয় বিআরএস ২০৩ নং খতিয়াতের ১৭৩৬ ও ১৭৪৩নং দাগের ১২২ শতাংশ, বিআরএস ২০০ নং খতিয়ানের ১৭৩৯ নং দাগের ৯১ শতাংশ জমি এবং বিআরএস ১২১৯ নং দাগের ১৭৩৮ নং খতিয়ানের ৩১ শতাংশ জমির মালিকানা আবুল কাশের হাওলাদার। এই জমিতে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে উভয়পক্ষকে নির্দেশন দেন আদালত। পরে ২৭ আগস্ট নোটিসের মাধ্যমে দুইপক্ষকে আইন মেনে চলতে ও বিরোধপূর্ণ জমিতে কোন কর্মকান্ড না চালাতে ডাসার থানার এএসআই শহিদুল হক চিঠি দেন। আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করেই ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর দুইদিন ব্যাপী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম হাওলাদারেরর শতাধিক গাছ কেটে নেয় প্রতিবেশি শাহাদাৎ কাজী ও তার লোকজন। বিষয়টি নিয়ে পুরো পরিবারে বাড়ছে আতঙ্ক।
কাশেম হাওলাদারের মেয়ে শিউলি আক্তার বলেন, ‘আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তিতে লাগানো পুরনো শতাধিক গাছ কেটে নিয়ে গেছে শাহাদাৎ কাজী ও তার তিনভাই। গাছের মূল্য প্রায় ৫ লাখ টাকা। বাড়িতে আমার বাবা নেই। তিনি ৫ আগস্টের পর পলাতক রয়েছেন। এই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়েছেন শাহাদাৎ কাজী ও তার ভাইয়েরা। আমরা এখন খুবই আতঙ্কে আছি।’
এ ব্যাপারে শাহাদাৎ কাজী বলেন, ‘আমাদের জমিতে থাকা গাছ আমরা কাটছি। অন্যকারো জমির গাছ কর্তণ করছি না। আদালতে যে অভিযোগ করেছে সেটা এই জমির দাগ নয়। প্রয়োজনে সরকারি সার্ভেয়ার দিয়ে জমি পরিমাপ করে আমাদের বুঝিয়ে দেয়ার দাবি করছি।’
শাহাদাৎ কাজীর ছোটভাই আসেফ কাজী বলেন, ‘আমার বিআরএস ১৭৩৭ নং দাগের জমিতে গাছ কেটে নিচ্ছি। এটা নিয়ে আদালতে কোন অভিযোগ দেয়নি কেউ। তারা যে দাগের জমির বিষয়ে আদালতে ১৪৫ ধারায় অভিযোগ দিয়েছে সেটা এই জমির কোন অংশ নয়। আমাদের জমির গাছ আমরা কাটতেই পারি। এ নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকার কথা নয়। আমরা চাই জমি নিয়ে কোন ঝামেলা মনে করলে পুরো জমি পরিমাপ করে সীমানা নির্ধারণ করা হোক।’
মাদারীপুরের ডাসার থানার এএসআই শহিদুল হক বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে দুইপক্ষকেই নোটিস প্রদান করা হয়েছে। তাদেরকে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতেও বলা হয়েছে। যদি কেউ এই নিয়ম ভঙ্গ করেন তাহলে আদালতের নির্দেশে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মাদারীপুরের ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. এহতেশামুল ইসলাম জানান, ‘আদালত থেকে নির্দেশনা পেয়ে থানা পুলিশ গিয়ে নোটিস দিয়ে এসেছে। কেউ আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
Comments