
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চার দফা দাবিতে রোববার থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের গণছুটির ঘোষণা দিয়েছেন, যা বিদ্যুৎ সরবরাহে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি করেছে। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে পল্লী বিদ্যুতের সংস্কার, চাকরির বৈষম্য দূরীকরণ, হয়রানিমূলক পদক্ষেপ বন্ধ এবং অবৈধ বরখাস্ত বাতিল।
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পবিসের সহ-দপ্তর সম্পাদক অঞ্জু রানী মালাকার এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় একাধিকবার আশ্বাস দিলেও কোনো দাবি বাস্তবায়ন করেনি। আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতদের চাকরিচ্যুতি, বদলি ও বরখাস্তের মাধ্যমে হয়রানি করা হচ্ছে।”
সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার সনৎ কুমার ঘোষ জানান, তাদের অধীনে ২২৭ জন লাইনম্যানের মধ্যে বর্তমানে মাত্র ২-৩ জন উপস্থিত। তিনি গণছুটিকে “রাষ্ট্রবিরোধী” আখ্যা দিয়ে বলেন, “এর ফলে ৬ লাখ ৩০ হাজার গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সেনা ক্যাম্পকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।”
একইদিন সাতক্ষীরায় আরেকটি সংবাদ সম্মেলনে পাটকেলঘাটা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম সাধন কুমার দাস অভিযোগ করেন, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা নিম্নমানের মালামাল ক্রয় করে হাজার কোটি টাকা লুটপাট করছেন। এর ফলে গত দুই মাসে সাতজন লাইন ক্রু এবং গত এক বছরে ৩০ জনের বেশি কর্মচারী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন। তিনি বলেন, “দুর্নীতির প্রতিবাদে আন্দোলনের জন্য শতাধিক কর্মচারীকে চাকরিচ্যুতি, বরখাস্ত ও মামলার মুখোমুখি হতে হয়েছে।”
গণছুটির ঘোষণায় গ্রাহকদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। তারা আশঙ্কা করছেন, ঝড়-বৃষ্টিতে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়লে বা লাইনে সমস্যা হলে মেরামত কাজ ব্যাহত হবে, যা কৃষক, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের জন্য সংকট তৈরি করবে।
সংবাদ সম্মেলনে সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার সাদিকুল ইসলাম, লাইনম্যান গ্রেড-২ সাইফুল ইসলাম, এলটি জাকির হোসেন, এমআরসিএজ মাহবুবুর রহমানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
Comments