Image description

কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদী থেকে জেলে ও মাঝিমাল্লাদের ট্রলারসহ ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। এ নিয়ে গত ২০ দিনে ৪০ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছেন মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সদস্যরা। ফলে জেলেদের কাছে এখন আতঙ্কের এক নাম এ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সদস্যরা।

তারা স্পিডবোট নিয়ে নাফ নদীর বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে অস্ত্রের মুখে জেলেসহ মাছ ধরার ট্রলার ধরে নিয়ে যাচ্ছেন। সর্বশেষ সোমবার, ২৫ আগস্ট একটি মাছ ধরার ট্রলারসহ বাংলাদেশি ৭ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি। এর আগে গত ৪ দিনে ধরে নিয়ে যায় ৩৩ জেলেকে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ শিকার শেষে টেকনাফে ফেরার পথে আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় শাহপরীর দ্বীপের নাইক্ষ্যংদিয়া নামক নাফনদীর মোহনা থেকে তাদের ধরে নিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ঘাটে ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বলেন, ‘ট্রলারটির মালিক টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল মোনাফের ছেলে উমর ছিদ্দিকের। ওই ট্রলারে ৭ জন মাঝিমাল্লা ছিলেন।’

ট্রলারের মাঝি এবাদুল্লাহর বরাত দিয়ে আবুল কালাম বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকার শেষে টেকনাফে ফেরার পথে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব-দক্ষিণে নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনা সংলগ্ন নাইক্ষ্যংদিয়া নামক এলাকায় পৌঁছালে আরাকান আর্মির সদস্যরা স্পিডবোটে তাদের ধাওয়া করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। এসময় মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানান ট্রলারের মাঝি এবাদুল্লাহ। এরপর ট্রলারসহ তাদেরকে মিয়ানমারের ফাতংজা খালে নিয়ে যায়।’

ট্রলার মালিক সমিতি ও বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে  এখন পর্যন্ত ২৪৪ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বর্ডার গার্ড  বাংলাদেশের (বিজিবি) প্রচেষ্টায় কয়েক দফায় ১৮৯ জন জেলে এবং ২৭টি ট্রলার ও নৌকা ফেরত আনা হয়েছে।

ট্রলার মালিকদের দাবি, আরাকান আর্মির সদস্যরা স্পিডবোট নিয়ে নাফ নদীর বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে পড়ছেন। তারা অস্ত্রের মুখে টেকনাফের জেলেসহ মাছ ধরার ট্রলার ধরে নিয়ে যাচ্ছেন। বিজিবির তৎপরতায় কিছু জেলেকে ফেরত আনা গেলেও ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা বন্ধ হচ্ছে না। এ নিয়ে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, গত ২০ দিনে ৪০ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি। এর মধ্যে রবিবার, ২৪ আগস্ট দুটি ট্রলারসহ আরও ১৪ জেলে, শনিবার, ২৩ আগস্ট একটি ট্রলারসহ ১২ জেলে, ১২ আগস্ট এক ট্রলারসহ ৫ জেলে এবং ৫ আগস্ট বিহিঙ্গি জাল ও নৌকাসহ ২ জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশনের কমান্ডার ও টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিনের ‍দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে আরাকান আর্মি সদস্যরা বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ শিকার শেষে ফেবার পথে বাংলাদেশি ট্রলারসহ জেলেদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’