
দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের সিন্ডিকেট এককভাবে ভাঙা সম্ভব নয়, এর জন্য জনগণের সম্পৃক্ততা ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত দরকার বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুর জাহান বেগম। শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে সিন্ডিকেট ছাড়া হাসপাতাল চলেছে, এমনটা বলা কঠিন। তবে এই সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য কেবল হাসপাতালের নিজস্ব সিদ্ধান্ত যথেষ্ট নয়, বরং জনগণ ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি।
কেনাকাটায় দুর্নীতি বন্ধে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, এখন থেকে সব ধরনের কেনাকাটা ইজিপি (e-GP) বা ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্টের মাধ্যমে হবে। এর ফলে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অনেকাংশে কমে আসবে। তিনি মনে করেন, এতে ৯৮ থেকে ৯৯ শতাংশ দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব হবে।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা স্বীকার করেন যে, দেশে প্রায় ১০ হাজার চিকিৎসক এবং ১০ হাজারের বেশি নার্সের ঘাটতি রয়েছে। এই সংকট একদিনে তৈরি হয়নি, বরং এটি দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত সমস্যা। তিনি জানান, চিকিৎসক সংকট মোকাবিলায় বিশেষ বিসিএস-এর মাধ্যমে দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগের চেষ্টা চলছে।
নার্স নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সম্প্রতি সাড়ে ৩ হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং এক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি। তিনি আরও বলেন, বিগত ৫০ বছরের অনিয়ম ভেঙে নতুন ব্যবস্থা চালু করতে সময় লাগবে।
অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের বিষয়ে নুর জাহান বেগম বলেন, এই সিন্ডিকেটে রাজনৈতিক কর্মীসহ বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত। তিনি প্রশ্ন তোলেন, 'একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষে এই সিন্ডিকেট দমন করা কতটা সম্ভব?' এ সময় তিনি আবারও জনগণের সম্মিলিত প্রতিরোধের ওপর জোর দেন।
পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. আবু জাফর, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকালে তিনি তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন।
Comments