Image description

বিচারকের বাসায় ঘুষ পাঠানোর অভিযোগে পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. রুহুল আমিন-এর সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে  আদালতের বিচারক নীলুফার শিরিন-এর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সমিতির এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিচারক নীলুফার শিরিন গত ২০ আগস্ট বার কাউন্সিল, সুপ্রিম কোর্ট, আইন মন্ত্রণালয় এবং জেলা আইনজীবী সমিতির কাছে অ্যাডভোকেট রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। 

অভিযোগে তিনি জানান, তাঁর আদালতে বিচারাধীন একটি ধর্ষণ মামলার (কেস নং-২৬১/২৫) আসামির পক্ষে অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান। বিচারক কোনো উত্তর না দেওয়ায় পরদিন সকালে রুহুল আমিনের একজন লোক তাঁর বাসায় একটি লাল ব্যাগে দুটি প্যাকেট রেখে যান।

ব্যাগের ভেতরে দুটি খাম ছিল। একটিতে মামলার কাগজপত্র এবং অন্যটিতে ৫০০ টাকার নোটের একটি বান্ডিল, যা আনুমানিক ৫০ হাজার টাকা। বিচারক অভিযোগ করেন, এই ঘটনায় তিনি মানসিকভাবে অত্যন্ত অপমানিত এবং ক্ষুব্ধ হন। তিনি বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে জেলা আইনজীবী সমিতি এবং জেলা জজকে অবহিত করেন।

বিচারক তার অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন শহীদ জসিমের কন্যার আলোচিত গণধর্ষণ মামলার পিপি হয়েও আসামির পক্ষে তদবির করেছেন। তিনি জানান, এমন একজন পিপির সঙ্গে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করা তার পক্ষে সম্ভব নয়, কারণ এতে বিচারকের সততা ও সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

বিচারকের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আজ দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতির এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ১৮৪ জন সদস্যের উপস্থিতিতে সর্বসম্মতিক্রমে অ্যাডভোকেট রুহুল আমিনের সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একইসঙ্গে তাকে এক সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছেন পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. হুমায়ুন কবির।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত অ্যাডভোকেট মো. রুহুল আমিন বলেন, "এটি আমার বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র। ওই মামলাটি পূর্ববর্তী সরকারের সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছিল। তাই আমি বিচারককে বিষয়টি অবহিত করেছি মাত্র।"