গোবিন্দগঞ্জে পলাতক আওয়ামী লীগের ইউপি চেয়ারম্যানরা পদে বহাল, জনগণের ভোগান্তি

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী লীগের ১২ জন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান পলাতক থাকলেও পদে বহাল রয়েছেন, যা সেবাপ্রত্যাশী জনগণের জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পরিপ্রেক্ষিতে অনেক নেতা-কর্মী আত্মগোপনে চলে যান।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা রয়েছে, যার মধ্যে ১২টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের। এদের বিরুদ্ধে বিএনপির দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের উপর হত্যাচেষ্টার মতো অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।
সম্প্রতি চারজন চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার হয়েছেন— তালুককানুপুর ইউনিয়নের মাসুদ রানা, মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের আনোয়ারুল ইসলাম, সাপমারা ইউনিয়নের আবু তালেব এবং কামদিয়া ইউনিয়নের মোশাহেদ হোসেন চৌধুরী বাবলু।
অন্যান্য অভিযুক্ত চেয়ারম্যানদের মধ্যে রয়েছেন কাটাবাড়ী ইউনিয়নের রহমান মুরাদ, দরবস্ত ইউনিয়নের আ.র.ম শরিফুল ইসলাম জর্জ, শিবপুর ইউনিয়নের সেকেন্দার আলী, কামারদহ ইউনিয়নের তৌকির হাসান রচি, শালমারা ইউনিয়নের আনিছুর রহমান, নাকাই ইউনিয়নের সাজু খন্দকার এবং ফুলবাড়ী ইউনিয়নের আনিছুর রহমান শিবলু।
জানা গেছে, এই চেয়ারম্যানরা পলাতক থাকলেও প্রশাসনের সহযোগিতায় দায়িত্ব পালন করছেন। তবে নিয়মিত অফিসে অনুপস্থিত থাকায় সেবাপ্রত্যাশীদের ভোগান্তি বাড়ছে। কেউ কেউ গোপনে এসে নথিপত্রে স্বাক্ষর করে আবার অন্তরালে চলে যান।
মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম জানান, তারা সরাসরি মাসিক সভায় অংশ নেন না, তবে ইউপি সচিব প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে কাজ চালিয়ে নেন। নাকাই ইউনিয়নের সাজু খন্দকার দাবি করেন, কাগজপত্র সইয়ের জন্য ইউপি সচিব তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, এতে কাজ ব্যাহত হচ্ছে না।
কিন্তু স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতিতে সেবা ব্যাহত হচ্ছে এবং গোপনে লুটপাট অব্যাহত রয়েছে।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, “অনুপস্থিত চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাইনি। শুনেছি, কেউ কেউ সম্মানী ভাতা নেন না। অভিযোগ থাকলে উচ্চ মহলে জানানোর পরামর্শ দিচ্ছি।”
Comments