পুতিন-জেলেনস্কি বৈঠকের সম্ভাবনা, শান্তিচুক্তি নিয়ে সংশয় ইউরোপীয় নেতাদের

ইউক্রেন যুদ্ধ নিরসনে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় এই বৈঠক হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ। তবে এই বৈঠক ঘিরে ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে পুতিন এই বৈঠকে সম্মত হয়েছেন। মের্জের মতে, পুতিনকে রাজি করাতে ট্রাম্পের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। মের্জ বলেন, "আমরা জানি না রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট কি এমন শীর্ষ বৈঠকে অংশ নেওয়ার সাহস রাখবেন কিনা।"
তিনি আরও জানান, দুই সপ্তাহের মধ্যে এই বৈঠক হতে পারে তবে স্থান এখনও নির্ধারিত হয়নি। ট্রাম্পও জানিয়েছেন যে, পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে আলোচনার প্রস্তুতি চলছে এবং এর পরে একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠকও হতে পারে যেখানে তিনি নিজেও উপস্থিত থাকবেন।
এদিকে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইউক্রেনে শান্তিরক্ষায় ইউরোপীয় সেনা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে ইউক্রেনে শান্তিরক্ষার কাজে ইউরোপীয় সেনাদের অংশগ্রহণ প্রয়োজন হবে। ম্যাক্রোঁ আরও বলেন, তিনি নিশ্চিত নন যে রাশিয়া সত্যিই শান্তি চায় কিনা কারণ রাশিয়া যদি আলোচনায় সাড়া না দেয় তবে ট্রাম্প "দ্বিতীয় দফার নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক আরোপ করতে প্রস্তুত"।
ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব অবশ্য পুতিনের সাহস নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, "পুতিনের আসলেই এমন বৈঠকে আসার সাহস আছে কিনা, সেটাই দেখা যাবে।"
তিনি জানান, হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে ইউরোপীয় নেতাদের বৈঠকে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে "কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত হয়নি"।
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ ইউক্রেনের ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে রাশিয়ার দাবিকে কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, "রাশিয়ার দাবি হলো, কিয়েভ যেন ডনবাসের অবশিষ্ট মুক্ত অংশগুলো ছেড়ে দেয়। আর বিষয়টিকে যদি তুলনা করা হয় তবে সেটি হবে যুক্তরাষ্ট্রকে ফ্লোরিডা ছাড়তে বলার সমান।"
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও মন্তব্য করেছেন যে, শান্তিচুক্তির জন্য উভয় পক্ষকেই কিছু ভূখণ্ড ছাড় দিতে হবে।
সব মিলিয়ে, পুতিন-জেলেনস্কি বৈঠকের সম্ভাবনা তৈরি হলেও ইউরোপীয় নেতারা এখনো পুরোপুরি আশ্বস্ত নন। শান্তি আলোচনা ও ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে তাদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা যাচ্ছে।
Comments