Image description

দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততায় আমরা অনেকেই নিয়মিত কোরআন তিলাওয়াত থেকে দূরে থাকি। যদিও এটি একজন মুসলিমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। নিয়মিত কোরআন তিলাওয়াত কেবল একটি ধর্মীয় অনুশীলন নয় বরং এটি আত্মিক প্রশান্তি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের এক অনন্য মাধ্যম। ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিদিন কোরআন তিলাওয়াত একজন মুসলিমের জীবনে অবিরত রহমত ও সওয়াবের দরজা খুলে দেয়।

কোরআন তিলাওয়াতকারীদের মর্যাদার বিষয়ে হাদিসে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। হজরত আনাস বিন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, "কিছু মানুষ আল্লাহর পরিজন।" সাহাবিরা জানতে চাইলেন, "হে আল্লাহর রাসূল, তারা কারা?" তিনি বলেন, "কোরআন তিলাওয়াতকারীরা আল্লাহর পরিজন এবং তার বিশেষ বান্দা।" (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২১৫)।

কোরআনের প্রতিটি হরফ তিলাওয়াতের জন্য মহান আল্লাহ দশটি করে সওয়াব দান করেন। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোরআনের একটি হরফ পাঠ করবে, সে একটি নেকি লাভ করবে। আর প্রতিটি নেকিকে দশগুণ বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়। আমি বলি না যে, আলিফ-লাম-মীম মিলে একটি হরফ; বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ, এবং মীম আরেকটি হরফ।" (তিরমিজি, হাদিস: ২৯১০)।

যারা নিয়মিত কোরআন তিলাওয়াতের অভ্যাস গড়ে তোলেন, আল্লাহ তায়ালা তাদের প্রতি বিশেষভাবে দয়ালু হন। যদি কেউ নিয়মিত তিলাওয়াত করার পর কোনো কারণে (যেমন: অসুস্থতা, ভ্রমণ, বা অন্য কোনো কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে) তা করতে না পারেন, তবুও আল্লাহ তাকে সেই দিনের সওয়াব দান করেন। এটি আল্লাহর অপার করুণা যা একজন মুমিনকে সব পরিস্থিতিতে পুরস্কৃত করে।

কোরআন আল্লাহর কালাম বা ঐশী বাণী। তাই প্রতিদিন কোরআন তিলাওয়াত করা মানে আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করা। এই সংযোগ মানুষের অন্তরকে পবিত্র করে, গুনাহ থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে এবং জীবনকে আলোকিত করে তোলে। নিয়মিত তিলাওয়াত মানুষের অন্তরকে নরম করে এবং তাকে সৎ পথে পরিচালিত করে।