Image description

বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন ট্রেন্ড বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। যার মধ্যে অন্যতম হলো 'ফাইবারম্যাক্সিং'। এই ট্রেন্ডটি টিকটকসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। ফাইবারম্যাক্সিং হলো প্রতিদিন নাটকীয়ভাবে ফাইবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া, যা সাধারণত ৫০ গ্রাম বা তারও বেশি হয়। এটি প্রচলিত স্বাস্থ্য নির্দেশিকার প্রায় দ্বিগুণ। এই পদ্ধতির সমর্থকরা দাবি করেন যে, এটি হজমশক্তি উন্নত করে, অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে এবং ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (আইবিএস) এর লক্ষণ কমাতেও সাহায্য করে। কিন্তু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এই ধরনের হঠাৎ এবং অত্যধিক ফাইবার গ্রহণ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, হঠাৎ করে এত বেশি ফাইবার খাওয়া অন্ত্রের নাজুক ভারসাম্যকে নষ্ট করে দিতে পারে। অতিরিক্ত ফাইবার বিশেষ করে এক ধরনের ফাইবারের আধিক্য হলে পেটে ফাঁপা ভাব, তীব্র পেট ব্যথা, গ্যাস এবং ডায়রিয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

লন্ডনের একজন চিকিৎসক ডা. নিশ মানেক বলেন, "আমাদের অন্ত্র একটি সূক্ষ্মভাবে ভারসাম্যপূর্ণ ইকোসিস্টেম। সেখানে হঠাৎ কোনো এক ধরনের পুষ্টির আধিক্য এর প্রাকৃতিক ছন্দ নষ্ট করে দিতে পারে।"

গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের ৯১ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ৯৫ শতাংশ মানুষ তাদের দৈনন্দিন সুপারিশকৃত ২৫-৩০ গ্রাম ফাইবারও গ্রহণ করেন না। তাই ধীরে ধীরে ফাইবারের পরিমাণ বাড়ানো উপকারী হতে পারে কিন্তু হঠাৎ করে অত্যধিক ফাইবার গ্রহণ ক্ষতিকর হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

ধীরে ধীরে ফাইবার বাড়ান: স্বাস্থ্যকর উপায়ে ফাইবারের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য প্রতিদিনের খাবারে অল্প অল্প করে ফাইবার যুক্ত করুন, যাতে আপনার শরীর মানিয়ে নিতে পারে।

বিভিন্ন ধরনের ফাইবার খান: শুধুমাত্র ব্রেকফাস্ট সিরিয়ালের উপর নির্ভর না করে, শস্য, বিভিন্ন ধরনের ডাল, ফল এবং সবজি থেকে বিভিন্ন ধরনের ফাইবার গ্রহণ করুন।

ট্রেন্ড অনুসরণ থেকে বিরত থাকুন: কোনো ‘ডিটক্স’ পদ্ধতি বা হঠাৎ জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ট্রেন্ডের ফাঁদে পা দেবেন না।

ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন: অন্ত্রের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে একটি ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের ওপর গুরুত্ব দিন।