Image description

গাজায় চলমান মানবিক সংকটের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় এক শিশুসহ আরও ছয় ফিলিস্তিনির অনাহারে মৃত্যু হয়েছে। এর ফলে উপত্যকাটিতে অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২২ জনে, যার মধ্যে ১০১ জনই শিশু। সোমবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফার বরাত দিয়ে জানা যায়, সর্বশেষ নিহত শিশুর নাম মোহাম্মদ জাকারিয়া খাদের। যার বয়স মাত্র পাঁচ বছর। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, অনাহারে মারা যাওয়া বেশিরভাগ মানুষের মৃত্যু ঘটেছে গত তিন সপ্তাহের মধ্যে।

জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এই পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে বলেছে, গাজার শিশুরা অনাহার ও বোমাবর্ষণে মারা যাচ্ছে।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, গাজায় ক্ষুধা ও অপুষ্টির মাত্রা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সেখানকার এক-তৃতীয়াংশের বেশি মানুষ গত কয়েকদিন ধরে না খেয়ে আছে এবং প্রায় ৫ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। সংস্থাটি এই ভয়াবহ পরিস্থিতি এড়াতে জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।

এদিকে, আল-জাজিরার বরাত দিয়ে চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে, সোমবার ভোর থেকে গাজাজুড়ে ইসরায়েলের হামলায় কমপক্ষে ৪৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ছয়জন ত্রাণপ্রত্যাশী ছিলেন।

গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে গুলিতে নিহত এক শিশুর বাবা ইসমাইল কন্দিল আল-জাজিরাকে জানিয়েছেন, তার ছেলেকে যখন হত্যা করা হয় তখন সে নিরস্ত্র ছিল এবং শুধুমাত্র খাবারের সন্ধানে বের হয়েছিল। 

তিনি বলেন, তার কাছে কোনো গুলি বা অস্ত্র ছিল না। আমরা কী করেছি? এ ক্ষুধা ও গণহত্যা আর সহ্য করা যাচ্ছে না। আমরা বিপ্লবী বা কোনো আন্দোলনের সদস্য নই। আমরা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছি।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৬১ হাজার ৪৯৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫৩ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অন্তত ২৭০ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীও রয়েছেন।