নারায়ণগঞ্জে যানজটে নাজেহাল জনজীবন, জেলা প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষোভ

প্রাচ্যের ড্যান্ডি খ্যাত নারায়ণগঞ্জ শহর ভয়াবহ যানজটের কবলে পড়ে নিজস্ব ঐতিহ্য হারাচ্ছে। অবৈধ স্ট্যান্ড, অদক্ষ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, মার্কেট ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে অবৈধ পার্কিং, রুট পারমিটবিহীন যানবাহন এবং ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার নৈরাজ্যে প্রতিদিন নগরবাসীর বহু কর্মঘন্টা নষ্ট হচ্ছে। জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের নিষ্ক্রিয়তা এবং উদাসীনতার কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী ও শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় ব্যয় করছেন। শহরের প্রবেশপথগুলোতে ১০ মিনিটের পথ পার হতে ঘণ্টারও বেশি সময় লাগছে। জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও সিটি করপোরেশন প্রতি মাসে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় যানজট নিরসনের প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের জিমখানা মোড়, ডিআইটি, ২ নম্বর রেলগেট, গলাচিপা, ১ নম্বর রেলগেট, কালীরবাজার, পপুলার ডায়াগনস্টিক, মেডিনোভা, চাষাড়া মোড়, সোনালী ব্যাংক, জিয়া হল, খাঁজা মার্কেট, শহীদ মিনার, সরকারি মহিলা কলেজ, চাষাড়া রেল স্টেশন এবং সুগন্ধা বেকারির সামনে অবৈধ ইজিবাইক, সিএনজি, লেগুনা ও বাসের স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। এসব যানবাহনের অধিকাংশ চালক অনভিজ্ঞ, যার ফলে সড়কে বিশৃঙ্খলা ও যানজট বাড়ছে।
এছাড়া, অবৈধ রুট পারমিটবিহীন বাস, ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা, সিএনজি ও লেগুনা শহরে অবাধে চলাচল করছে। দিনের বেলা পণ্যবাহী ট্রাক, মার্কেট ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না থাকা এবং রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে সড়ক সংকীর্ণ হয়ে যানজট আরও তীব্র হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের রাস্তা ও ড্রেন মেরামতে উদাসীনতাও এই সমস্যাকে বাড়িয়ে তুলছে।
অনেক ক্ষেত্রে ইজিবাইক ও লেগুনায় কিশোর এবং শিশু চালক দেখা গেছে, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। জেলা ট্রাফিক বিভাগের টিআই আব্দুল করিম বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” তবে তিনি লোকবলের স্বল্পতার কারণে অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানান।
জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। নগরবাসী অভিযোগ করছেন, জেলা প্রশাসন, ট্রাফিক পুলিশ ও সিটি করপোরেশনের সমন্বিত তৎপরতার অভাবে যানজট নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।
Comments