
নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ উঠলে পুরো সংসদীয় আসনের ভোট বাতিল করতে পারবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ছাড়া বিনা ভোটে জয় ঠেকাতে একক প্রার্থীর বিপরীতে ‘না’ ভোটের বিধান চালু এবং ভোটের মাঠে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মতো ক্ষমতা দেওয়াসহ বেশকিছু বিষয়ে ক্ষমতা কমিশন ফিরে পেতে যাচ্ছে।
এ লক্ষ্যে গতকাল সোমবার ইসির বৈঠকে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২’ সংশোধনের খসড়া চূড়ান্ত করেছে ইসি। এখন আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের পর অধ্যাদেশ জারির মধ্য দিয়ে সংশোধিত এ আইন কার্যকর হবে। ফলে সরকার ঘোষিত আগামী ফেব্রুয়ারির ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে এ আইন প্রয়োগ করতে পারবে ইসি।
ইসি কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আরপিওতে যেসব বিধান ফিরছে তার সবই ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ছিল। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে অনুষ্ঠিত দশম, একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের বিভিন্ন পর্যায়ে এসব বিধান বাদ পড়ে। এর মধ্যে হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিলে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা ইসির হাতে থাকলেও আগের কমিশনগুলো এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এবারেও এ বিধান প্রয়োগে কারও অভিযোগের জন্য ইসি অপেক্ষা করবে, নাকি স্বপ্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নেবে– তা স্পষ্ট নয়। এর আগে এক বা একাধিক দল জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে অন্য দলের প্রতীকে ভোট করার সুযোগ পেত। এবার সে সুযোগ বন্ধ করার প্রস্তাব করা হয়েছে খসড়া প্রস্তাবে।
গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আরপিওর খসড়া চূড়ান্ত করার পাশাপাশি রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০২৫-এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়। বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ, আব্দুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, ইসি সচিব আখতার আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরপিও থেকে বহুল আলোচিত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতির ব্যবহারের সুযোগ বাদ দেওয়া হয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার রোধে নতুন বিধানও যুক্ত করা হয়েছে। বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ আরও জানান, আরপিও চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে ঐকমত্য কমিশনের সংস্কারের সুপারিশকে বিবেচনায় আনা হয়েছে। এদিন ইসির বৈঠকটি বেলা ১১টায় শুরু হয়ে দুদফা বিরতি দিয়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে শেষ হয়। পরে কমিশনের সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন তিনি।
Comments