গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যাকাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই আশুলিয়ায় আরেক সাংবাদিকের ওপর হামলা ও অপহরণের চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ৭১ টিভির আশুলিয়া প্রতিনিধি জাহিদুল ইসলাম অনিকের ওপর হামলা ও অপহরণের চেষ্টার ঘটনায় স্থানীয়রা দুজনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।

সোমবার (১১ আগস্ট) রাত সাড়ে দশটার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম অনিককে উদ্ধার করে প্রথমে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে তাকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার সকালে আটক দুজনকে আদালতে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (অপারেশন) সফিকুল ইসলাম সুমন।

জাহিদুল ইসলাম অনিক জানান, সোমবার রাতে তিনি ফার্মেসির আড়ালে মাদক ব্যবসা নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের কাজ শেষ করে বাইপাইলের একটি চায়ের দোকানে যাচ্ছিলেন। সেখানে দুজন মোটরসাইকেল নিয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছিল। বাসার উদ্দেশে রওনা হলে তারা তার পিছু নেয়। বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছানোর পর একটি প্রাইভেটকারে আরও চারজনকে দেখা যায়। কোনো কিছু বোঝার আগেই হামলাকারীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালায় এবং তাকে প্রাইভেটকারে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। স্থানীয়রা এগিয়ে এলে চারজন প্রাইভেটকার নিয়ে পালিয়ে যায়। তবে মোটরসাইকেল স্টার্ট না হওয়ায় দুজন পালাতে পারেনি এবং তাদের আটক করা হয়।

জাহিদুল আরও বলেন, “আমার অনুসন্ধান ছিল ফার্মেসির আড়ালে মাদক বিক্রি ও সরবরাহ নিয়ে। এ কারণে তারা আমাকে টার্গেট করেছিল। তারা জানতো আমি কাজ শেষে পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় যাব। তাদের পরিকল্পনা ছিল আমাকে অপহরণ করে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করা। আমি পরিস্থিতি বুঝে দ্রুত ওই স্থান ত্যাগ করি, কিন্তু তারা পিছু নেয়। বাইপাইলে আমার বাসার রাস্তায় তারা দেশীয় অস্ত্র ও প্রাইভেটকার নিয়ে অপেক্ষা করছিল। তারা আমাকে গাড়িতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং মারধর করে। স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে আমি রক্ষা পাই।”

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (অপারেশন) সফিকুল ইসলাম সুমন জানান, ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। গ্রেপ্তারকৃত দুজনকে মঙ্গলবার আদালতে পাঠানো হচ্ছে।

এ ঘটনা সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে। সাংবাদিক সমাজ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে।