Image description

দেশের প্রায় পাঁচ কোটি শিশু-কিশোরকে টাইফয়েডের টিকা দেওয়ার কর্মসূচি শুরু করছে সরকার। এই টিকাদান কার্যক্রম আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে। ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী (১৪ বছর ১১ মাস ২৯ দিন পর্যন্ত) শিশুরা এই টিকা নিতে পারবে। প্রথম ১০ দিন শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ স্কুলে এই টিকা দেওয়া হবে। এরপর যারা টিকা নিতে পারবে না, তাদের জন্য ইপিআইয়ের কেন্দ্রগুলোতেও টিকার ব্যবস্থা থাকবে। এই টিকা নিতে ইচ্ছুক সবাইকে আগে থেকে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

যেভাবে করবেন রেজিস্ট্রেশন:
১. রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু: গত ১ আগস্ট থেকে অনলাইনে এই রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা, মাদরাসা এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন করার জন্য আলাদা বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে।

২. অনলাইন পোর্টাল: রেজিস্ট্রেশন করতে একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে যেতে হবে। সেখানে প্রথমে জন্মতারিখ (দিন, মাস ও বছর) পূরণ করতে হবে।

৩. জন্ম নিবন্ধন বা মোবাইল নম্বর: রেজিস্ট্রেশনের জন্য ১৭ সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রয়োজন হবে। যদি কারো জন্ম নিবন্ধন সনদ না থাকে, তবে বাবা-মায়ের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করেও নিবন্ধন করা যাবে।

৪. তথ্য যাচাই: লিঙ্গ নির্বাচন এবং একটি ক্যাপচা কোড পূরণের মাধ্যমে আবেদনকারীর তথ্য যাচাই করা হবে। পরের ধাপে বাবা-মায়ের মোবাইল নম্বর, ই-মেইল, পাসপোর্ট নম্বর ও বর্তমান ঠিকানা পূরণ করতে হবে। এসব তথ্য না দিলেও আবেদন সাবমিট করা যাবে।

৫. ওটিপি ভেরিফিকেশন: 'সাবমিট' করার পর মোবাইল ফোনে আসা একটি ওয়ান-টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) দেওয়ার মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশনের প্রাথমিক ধাপ সম্পন্ন হবে।

৬. টিকা বাছাই ও কেন্দ্র নির্বাচন: এরপর টাইফয়েড বা মেনিনজাইটিসের মধ্যে থেকে টাইফয়েড টিকা বাছাই করতে হবে। দুটি অপশন আসবে: 'শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত' এবং 'শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানবহির্ভূত'।

শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অপশনে গিয়ে স্কুলের নাম, ঠিকানা ও শ্রেণি পূরণ করতে হবে এবং টিকাদান কেন্দ্র হিসেবে স্কুলটি নির্বাচন করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানবহির্ভূত শিশুদের জন্য নিকটস্থ টিকাদান কেন্দ্র বাছাই করতে হবে।

৭. ভ্যাকসিন কার্ড ডাউনলোড: সাবমিট করার পর একটি ভ্যাকসিন কার্ড আসবে, যা ডাউনলোড করে নির্ধারিত দিনে টিকাদান কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। টিকা দেওয়ার পর অনলাইনেই সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে।

জন্ম নিবন্ধন না থাকলেও উপায় আছে:
টিকাদান কর্মসূচির ব্যবস্থাপক ডা. আবুল ফজল মো. শাহাবুদ্দিন খান জানান, যাদের জন্ম নিবন্ধন সনদ নেই, তারাও টিকা নিতে পারবে। এক্ষেত্রে বাবা-মায়ের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে নিবন্ধন করতে হবে। টিকার তথ্য তাদের কাগজে লিখে দেওয়া হবে।

টিকার কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা:
ডা. শাহাবুদ্দিন খান বলেন, এই টিকা এক ডোজের ইনজেকশন, যা তিন থেকে সাত বছর পর্যন্ত সুরক্ষা দেবে। এই টিকাগুলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী তৈরি এবং শতভাগ পরীক্ষিত। এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। টিকাগুলো ভারত থেকে কেনা হয়েছে এবং এরইমধ্যে সব টিকা দেশে এসে পৌঁছেছে।