রাঙ্গামাটি ফিসারী সংযোগ বাঁধের দুই পাশে সবুজ পাহাড় ঘেরা কাপ্তাই হ্রদ। এই সংযোগ সড়কের বাঁধটি ভাঙনের কবলে পড়ে বাঁধ রক্ষায় ব্যবস্থা গ্রহণ করে রাঙ্গামাটি সড়ক ও জনপদ বিভাগ। বর্তমানে সড়কের উদ্যোগে কাপ্তাই হ্রদ ঘেঁষে বাঁধের একপাশে আরসিসি রিটেনিং ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। ভরাট করা হয়েছে মাটিও, সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য সেই মাটিতে রোপন করা হয়ে নানান জাতের ফুলের গাছ। ইতোমধ্যে এই পার্কটির নাম রাখা হয়েছে আরএইচডি লেক ভিউ গার্ডেন। যা পর্যটকদের ইতোমধ্যে আকর্ষণ করা শুরু করেছে। খুলবে পর্যটনে সম্ভাবনার নতুন দ্বারও। তবে এখানো সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে সড়ক বিভাগ।
এদিকে ,আরএইচডি লেক ভিউ গার্ডেনের কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। এতে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে গার্ডেনটি। প্রতিদিনই স্থানীয় ও জেলার বাহিরের ভ্রমণপিপাসুরা এই গার্ডেনে এসে ভিড় জমাচ্ছে। পর্যটকরা বলেছেন, এই গার্ডেনটি পরিপূর্ণ হলে আরও সৌন্দর্য বাড়বে।
স্থানীয় সাংবাদিক মোহাম্মদ সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল জানান, আসলেই রাঙ্গামাটি হচ্ছে সৌন্দর্য্যরে লীলায়িত নন্দনকানন। এখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বলতে আর্ন্তজাতিক ভাবে যেটি বুঝায়, সেই ধরণেরর সবকিছু আমাদের রাঙ্গামাটি জেলায় আছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম এই কাপ্তাই হ্রদ। এই হ্রদের বর্ণণা করে শেষ করা যাবে না। পাশাপাশি রয়েছে ঝর্ণা, পাহাড় সহ ভ্রমণপিপাসুদের জন্য অনেক কিছু রয়েছে।
তিনি আরও জানান, এই ফিসারী বাঁধ দুই পাশে ভেঙ্গে যাচ্ছিল এবং পানি যখন বেশি হয় তখন এটি ভাঙনের কবলে পড়ে। ফলে সড়ক বিভাগ এই বাঁধটি রক্ষা করতে অনেক কষ্ট করেছে। বর্তমানে সড়ক বিভাগের উদ্যোগে বাঁধের একপাশে রিটেনিং ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। এতে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য নানান প্রজাতে ফুলে চারা রোপন করে একটি গার্ডেন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এটি স্থানীয় ও জেলার বাহিরের পর্যটকদের আর্কষণ করতে শুরু করেছে। এটি হবে রাঙ্গামাটি পর্যটন শিল্পের জন্য নতুন দ্বার।
রাঙ্গামাটি সিএইচটি ট্যুরিজম এন্ড কালচার রির্সাচ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোলায়মান জানান, রাঙ্গামাটির ফিসারী বাঁধ সংযোগ সড়কটি একটি দৃষ্টিনন্দন সড়ক। এই সড়কটি সংরক্ষণ করা দরকার। পাশাপাশি এটি পর্যটন বান্ধব করার জন্য সৌন্দর্য বর্ধনের উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক বিভাগ। এটি একটি ভালো উদ্যোগ। তবে এটিকে আরো দৃষ্টিনন্দন এবং স্থায়ীভাবে যাতে রক্ষণাবেক্ষণা থাকে। কারণ রাঙ্গামাটিতে যেকোনো কাজ করার পর স্থায়ী হয় না। তাই এই গার্ডেনটি যেন রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় এবং আরও পর্যটনবান্ধব যেন করা হয়। ফলে পর্যটকরা সহজে আসা-যাওয়া করতে পারে। সেই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া উচিৎ।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে সড়কটির দৃষ্টিনন্দনের পরিকল্পনার উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক বিভাগ। এর বাহিরেও উন্নয়ন বোর্ড এবং জেলা পরিষদ যদি যৌথভাবে সড়কটি উন্নয়ন ও পর্যটনবান্ধব গড়ে তোলতে পারে,তবে এই সড়কটি হবে আরও দৃষ্টিনন্দন হবে। ফলে এটি প্রতিনিয়ত পর্যটকদের আর্কষণ করবে।
এ প্রসঙ্গে রাঙ্গামাটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা জানান, আরএইচডি লেক ভিউ গার্ডেনের যে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজটি হাতে নেয়া হয়েছিল, আসলে এটি শুরু করা হয়েছে আরও দুই মাস আগে থেকেই। এর আয়তন প্রায় দৈর্ঘ্য ৫০০ মিটার। আমাদের কাজের অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ। তবে আগামী এক মাসের মধ্যে কাজটি সমাপ্তি হবে বলে তিনি আশা করেন। এই কাজটি আমরা হাতে নিয়েছি প্রায় ৯০ লাখ টাকা বাজেট ছিল। সেই বাজেটের আলোকে কাজটি বাস্তবায়ন করছি। এই গার্ডেনটি রাঙ্গামাটি জেলার মানুষের জন্য একটি ঘুরাঘুরির জায়গা তৈরি হচ্ছে এবং পর্যটকদের জন্য এটি ভালো উদ্যোগ বলে মনে হয়। ভবিষ্যতে সড়কের ঐপাশে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি আরও জানান, রাঙ্গামাটিতে পর্যটকরা আসলে কয়েকটি পর্যটনকেন্দ্রে ঘুরে। এরমধ্যে আরএইচডি গার্ডেন যুক্ত হলো। এই গার্ডেনের বিশেষত্ব হচ্ছে, রাঙ্গামাটিতে পাবলিক কোনো গার্ডেন নাই। বিনামূল্যে এই গার্ডেনে প্রবেশ ও বসার এবং সময় কাটানো সুযোগ রয়েছে। পর্যটকদের আর্কষণ করতে এই গার্ডেনে ১০০ প্রজাতির উদ্ভিদকে সংরক্ষণ করা হবে এবং নন্দনিক গার্ডেন হিসেবে পরিচিতির চেষ্টা করা হবে। এতে স্থানীয় জনগণ এবং ভ্রমণপিপাসুদের সাথে বিভিন্ন উদ্ভিদের সখ্যতা গড়ে উঠবে।
Comments