Image description

মালয়েশিয়াজুড়ে অভিবাসন বিভাগের চালানো সমন্বিত ‘অপস গেমপুর বারসাসার’ অভিযানে অন্তত ৪৫০ জনের বেশি অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী আটক হয়েছে। অনেকেই গ্রেফতার এড়াতে পায়ে হেঁটে পালানোর চেষ্টা করেন, কেউ কেউ কাদা-মাটি মাখা জলাভূমিতে ঝাঁপ দিয়েও পালাতে চেয়েছেন, তবে শেষরক্ষা হয়নি।

বৃহস্পতিবার (৮মে) দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রাপ্ত খবর বলছে, অভিবাসন-সংক্রান্ত বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে এক হাজার ২৭০ বিদেশি নাগরিককে আটক করা হয়েছে। একইসঙ্গে অবৈধ অভিবাসীদের নিয়োগ ও আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে ১১ মালয়েশিয়ান নিয়োগকর্তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।

সবচেয়ে বড় অভিযানটি হয় উত্তরাঞ্চলীয় জেলা জোহরের পাঁচটি জেলায় একযোগে পরিচালিত ‘টার্গেটেড স্ট্রাইক অপারেশন’ নামক বড় পরিসরের অভিবাসন অভিযানে ৩৩০ জন বিদেশি শ্রমিককে আটক করেছে মালয়েশিয়ান অভিবাসন বিভাগ। নির্মাণ খাতে পরিচালিত এই অভিযানে একজন ৫০ বছর বয়সী মালয়েশীয় নির্মাণ সাইট ম্যানেজারকেও গ্রেফতার করা হয়েছে, যিনি অবৈধ অভিবাসীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে সন্দেহভাজন।

অভিযানটি বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে জোহর বারু, মুআর, সেগামাত, মেরসিং এবং বাতু পাহাটে একযোগে শুরু হয়। এতে অংশ নেয় ১২০ জন অভিবাসন কর্মকর্তার একটি দল, যারা মোট ৫১৬ জনের কাগজপত্র যাচাই করেন।

জহর অভিবাসন বিভাগের পরিচালক দাতুক মোহদ রুসদি মোহদ দারুস জানান, পরিদর্শনের ভিত্তিতে আমরা ২৩৯ জন বাংলাদেশি পুরুষ, ৬৫ জন ইন্দোনেশিয়ান (যাদের মধ্যে ৪ জন নারী), ২৪ জন মিয়ানমার নাগরিক, একজন পাকিস্তানি এবং একজন ভিয়েতনামি নাগরিককে বিভিন্ন অপরাধে আটক করেছি। এদের সবার বয়স ২০ থেকে ৫৭ বছরের মধ্যে।

রাজধানী কুয়ালালামপুরের জালান কুচিং-এ একটি কনডোমিনিয়ামের নির্মাণস্থলে অভিযান চালানো হলে দুজন বাংলাদেশি পালাতে গিয়ে কাদাময় পুকুরে ঝাঁপ দেন। কিন্তু তাদের আটক করা হয়।

কুয়ালালামপুর অভিবাসন বিভাগের পরিচালক ওয়ান মোহাম্মদ সাউপি ওয়ান ইউসুফ জানান, এদিন সকাল ১০টা ৩০ মিনিট থেকে শুরু হওয়া অভিযানে ২০০ বিদেশির কাগজপত্র যাচাই করা হয়। এতে ৪১ জন বাংলাদেশি, ১৭ জন ইন্দোনেশিয়ান (যাদের মধ্যে ২ জন নারী), মিয়ানমারের একজন এবং ভারতের এক নাগরিককে আটক করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সবাইকে ১৯৫৯/৬৩ সালের অভিবাসন আইন এবং ১৯৬৩ সালের অভিবাসন বিধিমালার আওতায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে বৈধ কাগজপত্র না থাকা, পাসের মেয়াদ অতিক্রম এবং অস্থায়ী কাজের পাসের অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

অভিযান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, অবৈধ অভিবাসীদের নিয়োগ, আশ্রয় বা সহায়তা দেওয়া মালয়েশিয়ান নাগরিক বা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।