Image description

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলকে নিষিদ্ধকরণসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দাবি আদায়ে ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিলসহ দুই দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি। 

আজ দুপুরে রাজধানীর মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয় এবং কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। দলটির নায়েবে আমির সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ একটি রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে সামনে অগ্রসর হচ্ছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের সফল গণঅভ্যুত্থানের পর স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে যায়। প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়ে। দেশে কোনো সরকার না থাকায় সাংবিধানিক শূন্যতার সৃষ্টি হয়। সংবিধানের অনেক বিধানাবলী অকার্যকর হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তি ও জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈধতার উৎস ও ভিত্তি হচ্ছে সংবিধানের অনুচ্ছেদ-৭ এ বর্ণিত বিধানাবলী ও জনগণের অভিপ্রায়।

তিনি বলেন, সংবিধানের ত্রুটি ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোগত অব্যবস্থাপনার সুযোগে কর্তৃত্ববাদী শাসন, ভিন্ন মত দমন, দুর্নীতি ও দলীয়করণের ফলে গোটা দেশ  অকার্যকর হয়ে পড়ে। 

তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর রাষ্ট্রের প্রয়োজনকে সামনে রেখে, জনগণের প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার ও স্বৈরাচারীর ফিরে আসার সকল পথ রুদ্ধ করার প্রত্যয় নিয়ে কাজ শুরু করে। গঠিত হয় বিভিন্ন সংস্কার কমিশন। সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ১৬৭টি প্রস্তাবের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলসমূহের সঙ্গে আলোচনায় বসে। দীর্ঘ আলোচনার পর ৮৪টি প্রস্তাব আকারে গৃহীত হয়। অনেকগুলো প্রস্তাবের সাথে দুই একটি রাজনৈতিক দলের ভিন্নমত পোষণ করায় অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।

লনির্বাচন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে জামায়াতের এ নায়েবে আমির বলেন, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, কলামিস্ট, লেখক, গবেষক, শিক্ষাবিদসহ নানা শ্রেণির মানুষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষে একমত পোষণ করেছেন। কিন্তু জনদাবি কার্যকরে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না। তাই জনদাবি আদায়ের লক্ষ্যে গণআন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।
 
দলের পক্ষ থেকে ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন তিনি। দাবিগুলো হলো—   
১. জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করা 
২. জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা 
৩. অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা 
৪. ফ্যাসিস্ট সরকারের সকল জুলুম নির্যাতন গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা 
৫. স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

এই পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানী ঢাকায় সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল, ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের সকল বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের সকল জেলা/উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেন ডা. তাহের।