
বৈষম্যহীন টেকসই উন্নয়নের জন্য অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণ ও সম্পদ আহরণে গঠিত টাস্কফোর্সের সুপারিশ বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)। রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে অন্তর্বর্তী সরকারের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক সংলাপে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “সরকার শ্বেতপত্র ও অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণে টাস্কফোর্স গঠন করলেও তাদের সুপারিশের বাস্তবায়ন দেখছি না। শ্রম, গণমাধ্যম, নারী ও স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সুপারিশে কোনো অগ্রগতি নেই। শিক্ষা খাতে তো কমিশনই গঠন হয়নি।”
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ১০ সেপ্টেম্বর গঠিত টাস্কফোর্স ৩০ জানুয়ারি তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। এতে সুপারিশ করা হয়েছিল—অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনা, ২০২৫-২৬ সালের বাজেট বাস্তবায়নের জন্য স্পষ্ট পরিকল্পনা, ২০২৫-২৭ সালের জন্য মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মূল্যায়ন, ঝুঁকিপূর্ণ খাত চিহ্নিত করে সংস্কার শুরু, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নত দেশে রূপান্তরের জন্য শক্তিশালী নীতিমালা এবং এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে কার্যক্রম গ্রহণ।
ফাহমিদা খাতুন জানান, শ্বেতপত্রের সুপারিশের কিছু প্রভাব ব্যাংক খাত, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে দেখা গেলেও জিডিপি প্রবৃদ্ধি, বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ, রাজস্ব আহরণ ও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে নেতিবাচক ধারা রয়েছে। তিনি বলেন, “মূল্যস্ফীতিতে কিছুটা উন্নতি দেখা গেছে। আগে যেটা ১০ শতাংশের বেশি ছিল, এখন তা কমছে। তবে কমার হার খুবই ধীর।”
তিনি আরও বলেন, “এক বছরে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সময় কম হলেও জীবন ও জীবিকায় স্বস্তি আনতে ব্যর্থতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতি এখনও উচ্চ, বিনিয়োগ আসছে না, কর্মসংস্থান বাড়ছে না, রাজস্ব আহরণও বাড়েনি।” তিনি স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি অব্যাহত রাখার পাশাপাশি টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য সরবরাহ চালু রাখার পরামর্শ দেন।
সিপিডি জানায়, জুন মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও জুলাই মাসে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত খাতে তা আবার বেড়েছে। জুলাইয়ে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৮.৫৫ শতাংশ, যা জুন মাসে ছিল ৮.৪৮ শতাংশ।
Comments