
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ফ্যাসিবাদী সরকার দেশের মানুষের বুকে গুলি চালিয়ে শেষ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল। তিনি অভিযোগ করেন, বিগত ১৬ বছরে দেশে 'মাফিয়াতন্ত্র' কায়েম করা হয়েছিল এবং কোটা পদ্ধতি ছিল দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির একটি হাতিয়ার।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) 'জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস' উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি মূলত ছিল দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির হাতিয়ার। এর বিরুদ্ধে তরুণ সমাজ দীর্ঘদিন প্রতিবাদ করলেও শাসকের টনক নড়েনি।
তিনি অভিযোগ করেন, এই সেক্টরে মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করে একটি সুবিধাভোগী শ্রেণী তৈরি করা হয়েছিল, যারা আর্থিক বা অন্য সুবিধার বিনিময়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কাজ করবে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ আহতদের তৎকালীন সরকার চিকিৎসা নিতে বাধা দিয়েছিল। হাসপাতালগুলোকে আহতদের চিকিৎসা না দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এ সময় তিনি আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণ করে জানান, শহীদ পরিবার এবং আহতদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে এবং গুরুতর আহতদের বিদেশেও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ড. ইউনূস বলেন, ৫ আগস্ট শুধু একটা বিশেষ দিবস নয়, এটি একটি প্রতিজ্ঞা এবং ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে জাতির পুনর্জন্মের দিন। তিনি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পরেও দেশের মানুষ সুবিচার ও গণতন্ত্র থেকে বঞ্চিত হয়েছে এবং বৈষম্যের শিকার হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান ছিল ১৬ বছরের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। তিনি উল্লেখ করেন, ভালো ফলাফল করেও তরুণদের চাকরির জন্য ক্ষমতাসীনদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে হয়েছে। চাকরিকে কেন্দ্র করে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও তদবির বাণিজ্যের সৃষ্টি হয়েছিল।
শেষে, প্রধান উপদেষ্টা একটি গণতান্ত্রিক, মানবিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।
Comments