গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনে আদিবাসী শব্দ ব্যবহারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনে সুপারিশকৃত প্রতিবেদনে আদিবাসী শব্দ ব্যবহার করার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সচেতন ছাত্র জনতা। বুধবার (১০ সেপ্টম্বর) সকালে রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে বর্তমান সরকারের গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশে ১৯৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে ১১৩, ১৪৬,১৪৭,১৪৮ পৃষ্ঠায় বিতর্কিত আদিবাসী শব্দের ব্যবহারের প্রতিবাদে ও প্রতিবেদন থেকে আদিবাসী শব্দ বাদ দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এসময় বিক্ষোভ সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙামাটি জেলার সভাপতি তাজুল ইসলাম তাজ এর সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক পারভেজ মোশাররফ হোসেন এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পিসিএনপি'র কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান।
প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সম-অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি'র রাঙামাটি জেলা সভাপতি মোহাম্মদ সোলায়মান।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, পিসিএনপি'র রাঙামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহিম, পিসিএনপি'র সহ-সভাপতি কাজী জালোয়া, পিসিসিপি'র কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি আসিফ ইকবাল, সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল মাহমুদ, যুগ্ন সম্পাদক হাবীব আল মাহমুদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন, রাঙামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক মো: আলমগীর হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ইসমাঈল গাজী প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত (০৫ আগষ্ট ২০২৪) হাজার প্রাণের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার পথে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। এরপর আমরা আশা করেছিলাম দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ হবে। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু উপজাতীয় কুচক্রী মহল ও সমতলের বাম সংগঠনের সুশীল নামধারী ষড়যন্ত্রকারীরা দীর্ঘদিন ধরে আদিবাসী ইস্যু নিয়ে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। মূলত গণমাধ্যমে আদিবাসী শব্দের ব্যবহার এরপরে সাংবিধানিক স্বীকৃতি আদায় এরপরে বাংলাদেশ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার এমনি ভয়ংকর পরিকল্পনা থেকে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনে সুপারিশ কৃত প্রতিবেদনে আদিবাসী শব্দের ব্যবহার করেছে যা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।
বক্তারা আরো বলেন, ২০০৫ সাল থেকে সকল সরকার বাংলাদেশের ট্রাইবাল জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী বলে আখ্যা না দেয়ার জন্য একের পর এক প্রজ্ঞাপন ও নির্দেশনা জারি করছে ও আদিবাসী বিষয়ক জাতিসংঘের ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশ স্বাক্ষর না করলেও বর্তমান সরকারের গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশে ১৯৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে ১১৩, ১৪৬,১৪৭,১৪৮ পৃষ্ঠায় আদিবাসী শব্দের ব্যবহার করেছে। কমিশনের প্রধান ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কামাল আহমেদ গত শনিবার (২২ মার্চ) দুপুরে আপনার নিকট (প্রধান উপদেষ্টার) কাছে জমা দেয়া এ প্রতিবেদনে আদিবাসী শব্দের ব্যবহার দেখা গিয়েছে। ‘আদিবাসী’ শব্দটি ব্যবহার না করার বিষয়ে আরো অনেক সরকারি প্রজ্ঞাপন থাকার পরও গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের রিপোর্টে বিভিন্নস্থানে আদিবাসী শব্দের ব্যবহার করা হয়েছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগ জনক।
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ কৃত প্রতিবেদনে আদিবাসী শব্দের ব্যবহার ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি এবং বাম সংগঠনের কিছু ব্যক্তি কর্তৃক আদিবাসী হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে পৃথক রাষ্ট্রে পরিণত করার সূদরপ্রসারী ষড়যন্ত্র। তাই গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন কর্তৃক প্রতিবেদনে 'আদিবাসী' শব্দ বাদ দিয়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী/উপজাতি শব্দ লিখার দাবি জানান বক্তারা। অন্যথায় দেশ প্রেমিক ছাত্র জনতা তিন পার্বত্য জেলাকে অচল করে দিবে।
পাহাড়ের শান্তিপ্রিয় দেশ প্রেমিক সচেতন ছাত্র-জনতারা আশা করেন দেশের অখন্ডতা রক্ষায় গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনে সুপারিশ কৃত প্রতিবেদন থেকে প্রধান উপদেষ্টা আদিবাসী শব্দ বাদ দিবেন।
Comments