Image description

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামের নিউ মার্কেটে গুলিবিদ্ধ এক শিক্ষার্থী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৮২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এক বছরেরও পরে করা হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে ২০২১ সালের ১৮ মার্চ মারা যাওয়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টু।

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু বক্কর সিদ্দিকের আদালতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় হামলার অভিযোগে হত্যাচেষ্টা মামলাটি দায়ের করেন একেএম নুরুল্লাহ নামে এক যুবক। তিনি দাবি করেছেন, দীর্ঘ চিকিৎসা ও আসামিদের নাম-পরিচয় সংগ্রহে সময় লাগায় মামলাটি করতে দেরি হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ জেলার সদর থানার বগাদিয়া বিন্নাগাঁও গ্রামের মো. রতন মিয়ার ছেলে নুরুল্লাহ সীতাকুণ্ডের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রামের শিক্ষার্থী। সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি এলাকায় তিনি থাকেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী তাসনিম আক্তার নিশাত বলেন, গত বছরের ৪ অগাস্ট নিউ মার্কেট এলাকায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় নুরুল্লাহ হত্যাচেষ্টার অভিযোগে এ মামলা করেছেন। আদালত অভিযোগ গ্রহণ করে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন জমা দিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) আদেশ দিয়েছেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক, সাবেক সিইসি কে এম নুরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আওয়াল, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জোনায়েদ আহমেদ পলক ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলামকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।

এছাড়া চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সাবেক কমিশনার সাইফুল ইসলাম, সাইফপাওয়ার টেকের এমডি তরফদার রুহুল আমিন, অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ, শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমদ সিদ্দিক, সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের নাম রয়েছে আসামির তালিকায়।

সাবেক সংসদ সদস্যদের মধ্যে আসামি করা হয়েছে- ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি, এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, মুজিবুর রহমান, মাহবুবুর রহমান রুহেল, দিদারুল আলম, আবদুর রহমান বদি, আশেক উল্লাহ রফিক, সাইমুম সরওয়ার কমল, এস এম আল মামুন, এম এ লতিফ, আবু রেজা মো. নেজাম উদ্দিন নদভী ও মহিউদ্দিন বাচ্চুকে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত বছরের ৪ আগস্ট নগরের নিউ মার্কেট এলাকায় আন্দোলনে অংশ নেন এ কে এম নুরুল্লাহ। সেদিন আন্দোলনরত ছাত্রদের উপর হামলা হলে তিনি নিউ মার্কেটের ভিতরে আশ্রয় নেন।

সেসময় ‘আসামিদের নির্দেশে’ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা ও অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা করে। এতে নুরুল্লাহ দুই পায়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলিবিদ্ধ হন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

ঘটনার দিন আহত হওয়ার পর শুরুতে তাকে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান অপারেশন করে তার শরীর থেকে ১২টি বুলেট ও তিনটি রাবার বুলেট বের করা হয়।