Image description

পাহাড়ের কোলে ঝিরঝিরে শীতল পানির ধারা ভ্রমণপিপাসুদের মনে জাগায় অপার মুগ্ধতা। বর্ষা মৌসুমে যেন প্রাণ ফিরে পায় রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের ‘কলাবাগান ঝর্ণা’। প্রতিদিনই রাঙ্গামাটি ও আশপাশের জেলা-উপজেলা থেকে পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত হয় এই প্রাকৃতিক ঝর্ণা।

চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়কে কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া সেনাক্যাম্প পেরোলেই মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কলাবাগান এলাকায় রয়েছে অন্তত পাঁচটি প্রাকৃতিক ঝর্ণা। এই ঝর্ণাগুলো সমতল থেকে স্তরে স্তরে ১৫০ থেকে ২০০ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত। প্রতিটি ঝর্ণার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্য পর্যটকদের মনে স্থায়ী ছাপ ফেলে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঘাগড়ার কলাবাগানে একটি চায়ের দোকানের পাশ দিয়ে শুরু হয় ঝর্ণার পথ। পরিষ্কার পানির প্রবাহ, ছোট ছোট নুড়ি পাথর, পাহাড়ি ছড়া ও সবুজে ঘেরা প্রকৃতির মাঝ দিয়ে পথচলা শেষে পৌঁছানো যায় সবচেয়ে বড় ঝর্ণাটিতে। এই ঝর্ণা সমতল থেকে প্রায় ১৫০-২০০ ফুট উঁচু, যা দেখে পর্যটকদের মন জুড়ায়।

চট্টগ্রাম থেকে আগত পর্যটক হাবিব বলেন, “ঝর্ণাটির দিকে তাকালেই চোখ ও মন জুড়িয়ে যায়। চারপাশের সবুজের সমারোহ ঝর্ণাটিকে আরও মনোমুগ্ধকর করেছে। পথে আরও চারটি ঝর্ণার দেখা মিলেছে, যা ভ্রমণের আনন্দকে বাড়িয়ে দিয়েছে।”

রাঙ্গামাটি শহর থেকে আগত সবুজ জানান, “এই ঝর্ণা ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। তবে এখানে পর্যটন কেন্দ্র বা পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে।” 

রাউজান থেকে আগত নীরব বলেন, “ঝর্ণাটি অত্যন্ত সুন্দর, তবে পথ পিচ্ছিল। নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই, যা মনে ভয় জাগায়। নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে ভ্রমণ আরও আনন্দদায়ক হতো।”

রাঙ্গামাটি সিএইচটি ট্যুরিজম অ্যান্ড কালচার রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোলায়মান জানান, “ঝর্ণার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বন-বনানী সংরক্ষণ করে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। বন ধ্বংস হলে ঝর্ণাগুলো টিকবে না।”

কীভাবে যাবেন?

রাঙ্গামাটি শহর থেকে সিএনজি রিজার্ভ করে ২০০-২৫০ টাকা ভাড়ায় কলাবাগান ঝর্ণায় যাওয়া যায়। চট্টগ্রাম থেকে রাঙ্গামাটিগামী বাসে কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নে পৌঁছানো যায়। ঢাকা বা অন্য জেলা থেকে চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড়ে নেমে পাহাড়িকা বা দ্রুত যান সার্ভিস বাসে কলাবাগান ঝর্ণায় পৌঁছাতে পারবেন।

পর্যটন সম্ভাবনা

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় রাস্তা উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলে কলাবাগান ঝর্ণা রাঙ্গামাটির অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। এটি কাউখালীর অর্থনৈতিক চিত্র বদলে দিতে পারে।