Image description

রাজধানীর খিলক্ষেত ও মাদানী এভিনিউ এলাকায় আইন লঙ্ঘন করে খাস জমি, ফ্লাড-ফ্লো জোন ও প্রাকৃতিক জলাধার ভরাটের অভিযোগ উঠেছে স্বদেশ প্রপার্টিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে। প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০ এবং রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ ভঙ্গ করায় প্রতিষ্ঠানটিকে গত ১২ ডিসেম্বর নোটিশ দিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।

তবে সরেজমিনে দেখা গেছে, নোটিশের পরও স্বদেশ ‘স্বর্ণালী আবাসন’ প্রকল্প এলাকায় অবৈধ বালু ভরাট ও প্লট ক্রয়-বিক্রয় অব্যাহত রয়েছে। রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় ৩০০ ফিট সড়কের পাশে প্রায় ২৫০ বিঘা জমির ওপর গড়ে ওঠা এ প্রকল্পটি রাজউকের  অনুমতি ছাড়াই খাস জমি ও জলাধার দখল করে নির্মিত হচ্ছে বলে রাজউকের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া মাদানী এভিনিউ এলাকায় ১০০ ফুট সড়কের পাশে গড়ে তোলা ‘সানভ্যালি আবাসন’ প্রকল্পের ৩,৩০০ বিঘার মধ্যে বিপুল অংশ সরকারি খাস জমি ও জলাধার বলে জানিয়েছে রাজউক।

এর আগে রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ আশরাফুল ইসলাম বিভিন্ন গণমাধ্যমকে জানান, স্বর্ণালী আবাসন প্রকল্পের জন্য স্বদেশ প্রপার্টিজ কোনো অনুমতি নেয়নি। তাই নোটিশের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম স্থগিত করতে বলা হয়েছে এবং জবাব চাওয়া হয়েছে। 

স্বদেশ প্রপার্টিজের অবৈধ কার্যক্রমের প্রতিকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মানবকণ্ঠকে জানান, ‘স্বর্ণালী আবাসন অনুমোদন ছাড়া যদি বেআইনি কার্যক্রম চালায়, কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা তাদেরকে নজরদারিতে রাখব।

রাজউকের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অতীতে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগ নেয়া হলেও তৎকালীন মালিক ওয়াকিল উদ্দিনের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। বর্তমানে মালিকানা বিএনপি নেতা এম এ কাইয়ূমের হাতে যাওয়ায় রাজনৈতিক প্রভাবের কারণেই কোনো ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না।

কাইয়ূমের ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক যাত্রার সূচনা হয় স্বদেশ স্বর্ণালী প্রপার্টিজ নামক রিয়েল এস্টেট কোম্পানির মাধ্যমে। অভিযোগ রয়েছে- এই প্রতিষ্ঠানের আড়ালে জালিয়াতি করে জমি দখল, সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে অন্যের জমিতে বালি ভরাট এবং কম দামে জোরপূর্বক জমি কিনে নেয়া হতো। এসব অপকর্মে কাইয়ূমের সহযোগী ছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ও কেন্দ্রীয় নেতা ওয়াকিল উদ্দিন এবং কুখ্যাত সোনা চোরাচালানি গোল্ডেন মনির। হাসিনা সরকারের সময় এই নেটওয়ার্ক পরিচালনা করতেন ওয়াকিল উদ্দিন। সরকার পতনের পর নেতৃত্ব নেন কাইয়ূম ও গোল্ডেন মনির।