
জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধ হতে পারে—এমন একটি শঙ্কা দলটির অভ্যন্তরে প্রবলভাবে মাথাচাড়া দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ। তিনি মনে করেন, যেহেতু এই সিদ্ধান্ত সরকারকে নিতে হবে, তাই সরকারও কিছুটা চাপের মধ্যে রয়েছে। সম্প্রতি একটি ইউটিউব চ্যানেলে তিনি এ বিষয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ কর্তৃক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের ও মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীসহ ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদনের পর এই শঙ্কা আরও তীব্র হয়েছে। গতকাল, মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫), সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আখতারুজ্জামান সম্রাট এই মামলাটির আবেদন করেন।
মোস্তফা ফিরোজ বলেন, জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে এই মামলাকে অনেকে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার পূর্ববর্তী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, পরবর্তী ধাপে তাদেরকে 'সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত' হিসেবে আখ্যায়িত করা হতে পারে এবং পরে নির্বাহী আদেশে দলটিকে নিষিদ্ধ করা হতে পারে।
জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি যে কয়েকটি রাজনৈতিক দল জানাচ্ছে, তাদের মধ্যে জামায়াত ইসলামী অন্যতম। তবে বিএনপি এই বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে বলেছে যে, তারা নির্বাহী আদেশে কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার পক্ষপাতী নয়।
জামায়াত কেন একটি জাতীয় রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছে—এই প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা ফিরোজ একটি রাজনৈতিক ব্যাখ্যা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অনেকে মনে করছেন, জামায়াত তার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী রাখতে চাইছে না। ভবিষ্যতে যদি জামায়াত নির্বাচনে অংশ নেয়, তাহলে আওয়ামী লীগের সমর্থকরা যাতে জাতীয় পার্টির পতাকাতলে সংগঠিত হতে না পারে, সে কারণেই জামায়াত এই দাবি জানাচ্ছে। যদিও জামায়াত ইসলামী জাতীয় পার্টিকে 'আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর' হিসেবে আখ্যা দিয়ে দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে।
মোস্তফা ফিরোজের মতে, এই মুহূর্তে জাতীয় পার্টির মধ্যে নিষিদ্ধ হওয়ার শঙ্কা দারুণভাবে মাথাচাড়া দিয়েছে। কারণ, কয়েকটি রাজনৈতিক দল এই দাবিতে মাঠে নেমেছে, যা আসন্ন নির্বাচন ঘিরে একটি নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি করছে।
Comments