
ডাকসুর পর আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নিয়ন্ত্রণ নিল জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির, যারা এর আগে কখনো জাকসুতে কোনো পদ পায়নি।
তেত্রিশ বছর পর অনেক বিতর্ক সঙ্গী করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ-জাকসুর ঘটনাবহুল যে নির্বাচন হল, তাতে ভিপি বাদে জিএসসহ অধিকাংশ পদে জয়ী হলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রার্থীরা।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, ভিপি পদে স্বতন্ত্র আব্দুর রশিদ জিতু ৩৩৩৪ ভোট এবং জিএস পদে শিবিরের মো. মাজহারুল ইসলাম ৩৯৩০ ভোট পেয়ে জয় পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর শনিবার বিকাল ৫টা থেকে সিনেট ভবনে জাকসু ও ২১টি হল সংসদের ফলাফল ঘোষণা শুরু করা হয়।
জাকসুর ফলাফল ঘোষণার আগে ২১টি হল সংসদের ফলাফল ঘোষণা করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা। পরে কেন্দ্রীয় সংসদের ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান ও নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম।
ফলাফল ঘোষণার আগে মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই-অগাস্টের আন্দোলনে শহীদ এবং সহকারী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌসের আত্মার মাগফেরাত কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
ডাকসু নির্বাচনের দুই দিনের মাথায় ঢাকার অদূরে সাভারের এই ক্যাম্পাসের ভোটগ্রহণ নিয়ে সারা দেশের মানুষের আগ্রহ ছিল। প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থীর এই ক্যাম্পাসে বৃহস্পতিবার দিনভর ভোট শেষে প্রায় ৬৮ শতাংশ ভোট পড়ে বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
ভোটগ্রহণে অনিয়ম-বিশৃঙ্খলার অভিযোগের পর অধিকাংশ প্যানেলের বর্জন, দীর্ঘ সময় ধরে ভোটগণনার কাজের মধ্যে নির্বাচনি দায়িত্বে থাকা এক শিক্ষকের মৃত্যুর মত ঘটনা লেখা থাকবে এ নির্বাচনের আমলনামায়।
তবে মূল বিপত্তি ঘটে অভিযোগ থেকে মুখ রক্ষার জন্য ওএমআর মেশিনের বদলে হাতে ভোট গুনতে গিয়ে।
জামায়াত সংশ্লিষ্ট এক কোম্পানি থেকে ব্যালট পেপার ও ওএমআর মেশিন কেনার অভিযোগ উঠলে নির্বাচন কমিশন ভোট গণনার কাজটি মেশিনের বদলে হাতে করার সিদ্ধান্ত নেয়। আর তা করতে গিয়েই লেজেগোবরে দশা হয়।
১৯৭২ সালে শুরু হওয়া জাকসু নির্বাচনের এবারের দশম আয়োজন ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসাহ ছিল শুরু থেকে। ছাত্র সংগঠনগুলোও ভোটের দাবিতে সোচ্চার ছিল।
২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন পরিস্থিতিতে কয়েক দফা পেছানোর পর জাকসু নির্বাচনের তারিখ ঠিক করা হয় ১১ সেপ্টেম্বর। ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির, বাগাছাস, বাম-প্রগতিশীল, স্বতন্ত্রদের অন্তত সাতটি প্যানেলসহ অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন।
Comments