
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের জন্য ৭৭৫ কোটি ৩৩ লাখ ৭৮ হাজার ১৫৮ টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) নাসিকের নগর ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই বাজেট ঘোষণা করেন নাসিকের প্রশাসক এ এইচ এম কামরুজ্জামান। একই সাথে তিনি নগর উন্নয়নের স্বার্থে বকেয়া কর দ্রুত পরিশোধ করার জন্য সকল গ্রাহকের প্রতি আহ্বান জানান।
নাসিক প্রশাসক জানান, গত অর্থ বছর ২০২৪-২৫ এর সংশোধিত বাজেট ছিল ৫৪৪ কোটি ২৯ লাখ ৩ হাজার ৭৯৬ টাকা। এবার আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্যয়ের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৬৭৮ কোটি ৯৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। বছর শেষে প্রায় ৯৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা উদ্বৃত্ত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বাজেট অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বিশিষ্ট নাগরিক, পেশাজীবী, সাংবাদিক এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাজেট ঘোষণা অনুষ্ঠানে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা নগরীর যানজট, জলাবদ্ধতা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দৌরাত্ম্য, ফুটপাত দখল, অবৈধ যানবাহনের স্ট্যান্ড, এবং ওয়াসার পানির অতিরিক্ত বিল আদায়সহ বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন। এর জবাবে নাসিক প্রশাসক কামরুজ্জামান বলেন, "নারায়ণগঞ্জকে সুপরিকল্পিত, পরিচ্ছন্ন, সবুজ, পরিবেশবান্ধব ও দারিদ্র্যমুক্ত নগরী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই নতুন বাজেটে আগামী ২০ বছরের জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, এই পরিকল্পনার মধ্যে যানজট ও জলাবদ্ধতার স্থায়ী নিরসন, বর্জ্য ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ, খাল খনন, গভীর নলকূপ স্থাপন, এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া খাতে উন্নয়নে বিশেষ প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, নাগরিক সেবা সহজ ও আধুনিক করতে ডিজিটাল ই-সফটওয়্যারের মাধ্যমে ই-ট্রেড লাইসেন্স, ই-পানির বিল এবং ই-সনদ সেবা পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য ৭৩৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর উপর 'কদম রসুল' সেতু নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এই সেতু নির্মিত হলে বন্দর উপজেলা এবং নারায়ণগঞ্জ শহরের মধ্যে নদীর দুই পাড়ের মানুষের যাতায়াত সহজ হবে। পাশাপাশি জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রশস্ত ড্রেন ও স্যুয়ারেজ লাইন নির্মাণ এবং খাল খননের চলমান প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন হলে নগরবাসী স্থায়ীভাবে এর সুফল ভোগ করতে পারবে।
এছাড়াও, গত বছরের গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মত্যাগের স্থানগুলো চিহ্নিত করে তাদের নামফলকসহ ৩৪টি স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যান্ড নির্মাণের কাজ চলছে, যার মধ্যে ১৫টির কাজ প্রায় শেষ। নাসিকের বাজেটের অধীনে চারটি কবরস্থানে শহীদদের কবর সংরক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
Comments