Image description

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, ‘আপনারা মানুষের অধিকার কেড়ে নেন। বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে গরিব মানুষগুলোর ওপর অত্যাচার করেন। গরিব মানুষ আমার হৃদয়, তাদের ভালোবাসি। আমি জাতপাত মানি না।’ 

বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার মেয়ো রোডে তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্র সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় মমতা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে যাওয়া শ্রমিকদের হেনস্তারও কঠোর সমালোচনা করেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘মোদিজি সারাক্ষণ দুর্নীতি বলে চিৎকার করেন। অথচ সারাদেশে যেখানে যেখানে বিজেপি ক্ষমতায় আছে, সেখানে দুর্নীতি-সন্ত্রাস-গুজরাট মডেলই আসল চিত্র।’ বিজেপি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলায় মানুষকে প্রকৃত সামাজিক নিরাপত্তা দিতে কাজ করি, আর ওরা মানুষের অধিকার কেড়ে নেয়।’  

বিজেপি নেতা ও ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে উদ্দেশ করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘আপনারা পরিবারতন্ত্র করেন না! আপনার ছেলে তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার প্রেসিডেন্ট। রাজনীতি থেকে আয় নেই, আর ক্রিকেটের বিশ্ব সংস্থা থেকে হাজার হাজার কোটি কোটি টাকা আয়। রাজনীতির সঙ্গে কোনো যোগ নেই, তবুও রাজনীতির সর্বত্র আপনার পরিবারের ছড়াছড়ি। ললিপপ দিয়ে মানুষকে ভুলিয়ে রাখছেন। আমরা কিন্তু অধিকার দিই, ললিপপ নয়।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছেও ফান্ডা আছে। যেমন আমাদের কাছে লক্ষ্মীর ভান্ডার আছে, তেমনই দুর্নীতির ভান্ডারের ফাইলও আছে। দরকার হলে সব ফাঁস করে দেব।’

মমতা বলেন, ‘এনআরসি করে ভোটার নাম কাড়ার চেষ্টা হচ্ছে। আমার জীবন থাকতে একজনেরও ভোটাধিকার কাড়তে দেব না।’ তিনি বলেন, ‘আপনাদের জোর জুলুম বাংলা মানছে না, মানবেও না। বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চি ছাড়েনি, ছাড়ব না।’ ছাত্রদের সতর্ক করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘আমি সবাইকে বলছি– নিজের ভোটার তালিকা দেখে নেবেন। আধার কার্ডটা করে রাখবেন। কারণ, তারা অন্যের ডিটেলস নিয়ে গিয়ে ভোট কেটে দিতে পারে।’

এমন এক সময় মমতা এসব বিষয় নিয়ে ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করলেন, যখন ভোটার তালিকায় জালিয়াতি নিয়ে সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। 

তিনি দাবি করেছেন, ভারতের ভোটার তালিকায় কারচুপি করে ব্যাপকভাবে ‘ভোট চুরি’ করা হয়েছে। 

ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অভিযোগ, ভোটার তালিকা থেকে সংখ্যালঘু ও দলিতদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশনও। তারা রাহুল গান্ধীর অভিযোগকে ‘সংবিধানের অবমাননা’ বলে বর্ণনা করেছেন।