Image description

খুলনার ডুমুরিয়ায় যুবদল নেতা শামীমকে হত্যার অভিযোগে তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তার বৃষ্টি (৩০) ও মামাতো শ্যালক মো. ওবায়দুল্লাহ হাওদালার বাদলকে (১৮) গ্রেপ্তার করেছে র‍‍্যাব -৬ ও পুলিশ। সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার আঠারোমাইল এলাকার বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ফাতেমা আক্তার বৃষ্টির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাড়ির পাশের ডোবা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরাটি উদ্ধার হয়। 

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে খুলনা জেলা পুলিশ সুপার টি এম মোশাররফ হোসেন জানান, জিজ্ঞাসাবাদে শামীমের স্ত্রী বৃষ্টি জানান, শামীমের সঙ্গে তার পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধ ছিল। এ কারণে শামীম প্রায়ই তাকে শারীরিক নির্যাতন করতেন। নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। ঘটনার তিনদিন আগে পরিকল্পনা অনুযায়ী বৃষ্টি তার মামাতো ভাই ওবায়দুল্লাহকে ডেকে আনেন। ঘটনার আগেরদিন বৃষ্টি ওবায়দুল্লাহকে  জানান তিনি তার স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছেন। তিনি ওবায়দুল্লাহকে জিজ্ঞাসা করেন, শামীমকে হত্যা করতে পারবেন কিনা।

তিনি আরো জানান, ২২ আগস্ট রাতে খাবার শেষে শামীম ও বৃষ্টি তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে যান। কিছুক্ষণ পর ওবায়দুল্লাহ তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে যান। পরে তিনি ছাদে যান। সেখানে বৃষ্টির রেখে দেওয়া ছোরা নিয়ে তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে ফিরে আসেন। তখন বৃষ্টি শামীমকে হত্যার জন্য কীভাবে কোপ দিতে হবে তা ওবায়দুল্লাহকে ইশারার মাধ্যমে দেখিয়ে দেন। এ সময় ওবায়দুল্লাহ ছোরা দিয়ে শামীমের ঘাড়ে কোপ দেন। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে শামীম মারা যান। পরে বৃষ্টি ও ওবায়দুল্লাহ পরিকল্পনা অনুযায়ী ছাদে গিয়ে ছোরাটি পাশের জলাশয়ে ফেলে দিয়ে ভবনের দ্বিতীয় তলায় গিয়ে শামীমের মায়ের সঙ্গে স্বাভাবিক কথা বলতে থাকেন। পুলিশ গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জলাশয় থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরাটি উদ্ধার করে।

গত ২২ আগস্ট রাত ১১টার দিকে ডুমুরিয়া উপজেলার আঠারোমাইল এলাকার নিজ বাসার তৃতীয় তলার একটি কক্ষ থেকে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক এস এম শামীমের মরদেহ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুই যুবককে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। 

তারা হলেন- মণিরামপুর উপজেলার সুন্দলপুর এলাকার ইজাজুল ইসলাম (৪৩) ও তালা উপজেলার বলরামপুর গ্রামের শরিফুল ইসলাম (৩৮)। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। 

গত ২৪ আগস্ট নিহতের মা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা রশিদা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে ডুমুরিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। এরপর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে তদন্তে নামে পুলিশ ও  র‍‍্যাবের একাধিক ইউনিট। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে শামীমের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার বৃষ্টি ও তার মামাতো ভাই ওবায়দুল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয়।