
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলার অভিযোগে ১৯ বছর বয়সী প্রসূতি খাদিজা আক্তার তানিয়ার মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (২২ আগস্ট) সিজারের মাধ্যমে তার কন্যা সন্তান প্রসবের পর অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) স্থানান্তর করা হয়। শনিবার বেলা ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
খাদিজার দেবর হাসান অভিযোগ করেন, “ইকুরিয়া জেনারেল হাসপাতালের অবহেলা ও ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসার কারণে আমার ভাবীর অকাল মৃত্যু হয়েছে।” স্বজনদের দাবি, সিজারের সময় রোগীর রক্তনালি অতিরিক্ত কাটা হয়, যা সেলাই না করে তাকে ঢামেকে পাঠানো হয়। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে খাদিজার মৃত্যু হয়। ক্ষুব্ধ স্বজনরা শনিবার রাতে হাসপাতালে গিয়ে বিক্ষোভ ও সামান্য ভাংচুর করেন।
স্থানীয়রা জানান, এ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় একাধিক রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। বাসিন্দা জাকিয়া আক্তার বলেন, “গত বছর আমার বান্ধবীর মেয়ে এখানে ভুল চিকিৎসায় মারা গেছে।”
গৃহবধূ আখি খান অভিযোগ করেন, “হাসপাতালের যন্ত্রপাতি পুরনো, ভুল রিপোর্ট দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়।” ভুক্তভোগী সাব্বির হোসেন বলেন, “অনভিজ্ঞ ডাক্তার ও খারাপ ব্যবহার এখানে সাধারণ।”
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাসপাতালের মালিক রায়হান মিয়া ২০১৪ সালে এই ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্ড’ নামে আমানত সংগ্রহের ব্যবসা চালান, যা ফেরত দেওয়া হয় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাবেক কর্মচারী জানান, “অদক্ষ জনবল ও ভুয়া ডাক্তার দিয়ে রোগীদের অতিরিক্ত টেস্ট করিয়ে টাকা আদায় করা হয়।”
হাসপাতালের মালিক রায়হান মিয়া দাবি করেন, “রোগী কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে মারা গেছেন। তার পরিবারের কোনো অভিযোগ নেই।” তবে অভিযোগের বিষয়ে তিনি স্পষ্ট জবাব দেননি। সিজার করা ডা. আনিসা ফাহমিদার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
রোববার ঢাকা জেলা সিভিল সার্জনের একটি টিম হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আক্তার হোসেন জানান, “খাদিজার পরিবার অভিযোগ নিয়ে এসেছিল, তবে তারা আপসে মীমাংসা করেছে।”
Comments