Image description

ভারতের নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী একে অপরের মুখোমুখি অবস্থানে চলে এসেছেন। ভোটার তালিকায় কারচুপির মাধ্যমে ‘ভোট চুরি’ হচ্ছে—এমন অভিযোগ তুলেছেন রাহুল গান্ধী। এর প্রতিবাদে ভারতের ইসি রাহুল গান্ধীকে হয় হলফনামা পেশ করার নয়তো জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে দিল্লির এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতের তিন নির্বাচন কমিশনার রাহুল গান্ধীর অভিযোগকে ‘সংবিধানের অবমাননা’ বলে অভিহিত করেছেন। 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার অন্য দুই কমিশনারের পাশে থেকে বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তিনি আরও বলেন, যারা ‘ভোট জালিয়াতি’ বা ‘ভোট চুরির’ মতো শব্দ ব্যবহার করছেন তারা আসলে দেশের সংবিধানেরই অমর্যাদা করছেন।

কমিশনের এই বক্তব্যের কিছুক্ষণ আগেই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বিহারে ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’ শুরু করেন। ১৬ দিনব্যাপী এই পদযাত্রায় তিনি প্রায় ১,৩০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করবেন। বিহারের সাসারামে যাত্রার সূচনা করে তিনি অভিযোগ করেন, সারা দেশেই বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে ভোটার তালিকায় কারচুপি করে ভোট লুট করা হচ্ছে। বিহারে চলমান বিশেষ নিবিড় পর্যালোচনা (এসআইআর) প্রক্রিয়ায় ৬৫ লাখ ভোটারের নাম বাদ পড়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

এই বিতর্কের সূত্রপাত গত ৭ আগস্ট। রাহুল গান্ধী সেদিন একটি সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখান যে, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে শুধু ব্যাঙ্গালুরুর মহাদেবপুরা আসনেই অন্তত এক লাখ ভোটারের হিসেবে কারচুপি করা হয়েছে। 

তিনি আরও দাবি করেন, সারা দেশে যদি ৩০টি আসনেও এভাবে কারচুপি হয়ে থাকে তাহলে খাঁটি ভোটার তালিকা দিয়ে ভোট হলে নরেন্দ্র মোদী তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন না। তিনি বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনের যোগসাজশেরও অভিযোগ তোলেন।

নির্বাচন কমিশন অবশ্য তার সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, রাহুল গান্ধীকে তার অভিযোগের স্বপক্ষে হলফনামা পেশ করতে হবে। তা না হলে তাকে মিথ্যা অভিযোগ তোলার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার বলেন, রাহুল গান্ধী যদি সাত দিনের মধ্যে হলফনামা জমা না দেন বা ক্ষমা না চান, তাহলে কমিশন ধরে নেবে তার অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। তবে রাহুল গান্ধী এরই মধ্যে জানিয়েছেন যে, তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে সংবিধান ছুঁয়ে শপথ নিয়েছেন তাই নতুন করে আর কোনো শপথ নেবেন না।

কংগ্রেস নেতা পবন খেড়া কমিশনের সংবাদ সম্মেলনের পর বলেন, "এ থেকে বোঝা যায়, নির্বাচন কমিশন বিজেপির এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে।"

নভেম্বরে বিহারে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ভোটার তালিকা নিয়ে বিজেপি, নির্বাচন কমিশন ও বিরোধীদের মধ্যে এই সংঘাতের প্রথম বড় পরীক্ষা সেখানেই হতে যাচ্ছে।