Image description

খুলনা নগরীর হেলাতলা মোড়ে মহররমের চেহলামের নামে শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শোক দিবস পালনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। তবে, স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী ও ব্যবসায়ীদের বাধার মুখে এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (১৩ আগস্ট) দিবাগত রাতে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই রাতে হেলাতলা মোড়ে কিছু ব্যক্তি একটি গরু ও ৪-৫টি বড় ডেগ নিয়ে রান্নার আয়োজন করছিলেন এবং ভিডিও ধারণ করছিলেন। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা এই আয়োজন নিয়ে প্রশ্ন করলে তারা মহররমের চেহলামের খাওয়া-দাওয়ার অনুষ্ঠান বলে দাবি করেন। পরিচয় জানতে চাওয়ায় কয়েকজন পালানোর চেষ্টা করেন, এবং ৪-৫ জনকে বিএনপি নেতাকর্মীরা ধরে পুলিশে হস্তান্তর করেন।

বিএনপি নেতাকর্মীদের দাবি, সজিব ওয়াজেদ জয়ের ফেসবুক পেজে শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তারা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের লোকজন মহররমের অনুষ্ঠানের নামে ১৫ আগস্টের শোক দিবস পালনের চেষ্টা করছিলেন এবং ভিডিও করে তা ফেসবুকে প্রচারের পরিকল্পনা করেছিলেন। খুলনা সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোল্যা ফরিদ আহমেদ বলেন, “১৫ আগস্ট শুক্রবার সবকিছু বন্ধ থাকায় তারা ১৪ আগস্ট গরু জবাই করে মৃত্যুবার্ষিকী পালনের চেষ্টা করেছিল। আমরা হাতেনাতে ধরলে তারা মহররমের অনুষ্ঠানের কথা বলে, যদিও মহররম মাস দুই মাস আগেই শেষ হয়েছে।”

তবে, এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আয়োজক সংগঠন স্বর্ণপট্টি ইসলামী ইন্তেজামিয়া কমিটির সভাপতি ও জিতু জুয়েলার্সের মালিক আলহাজ্ব মো. রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, “৪০-৫০ বছর ধরে আমরা মহররম, ওয়াজ মাহফিল ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে আসছি। করোনা ও বৃষ্টির কারণে ২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই আয়োজন বন্ধ ছিল। এবার মহররমের শেষে বৃষ্টির কারণে অনুষ্ঠান হয়নি, তাই ১৩ আগস্ট এটি করা হচ্ছিল। ১৫ আগস্টের শোক দিবসের অভিযোগ সম্পূর্ণ আজগুবি। আমি নিজেই খুলনা মহানগরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি, তাই এমন অভিযোগ অযৌক্তিক।”

খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার সানোয়ার হোসাইন মাসুম জানান, “চেহলামের নামে গরু আনা হয়েছিল, কিন্তু যত্রতত্র গরু জবাই করা নিষিদ্ধ। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এটি বন্ধ করা হয়। তবে কাউকে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়নি।”

এদিকে, ১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ খুলনায় পুনরায় সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে। গত ৯ আগস্ট মধ্যরাতে খালিশপুর থেকে ফুলবাড়িগেট পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পোস্টার লাগানো হয়। বিক্ষুব্ধ জনতা পরে এসব পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে। এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, পোস্টার লাগানোর পেছনে কারা জড়িত, তা খুঁজতে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে।