পুলিশের লাঠি নিয়ে তরুণকে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল, ইউএনওর বিরুদ্ধে মামলা

নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুয়েল সাংমার বিরুদ্ধে পুলিশের লাঠি কেড়ে নিয়ে দুর্জয় (১৮) নামে এক তরুণকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান কবীর গত রোববার (১০ আগস্ট) আটপাড়া আমলি আদালতে ইউএনওর বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন। আদালত আবেদন আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, গত ২৪ মার্চ ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বানিয়াজান ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিএফের চাল বিতরণের সময় উপকারভোগীদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। ২,০৩৭ জন উপকারভোগীর জনপ্রতি ১০ কেজি চাল বিতরণের সময় সিরিয়াল না মানা এবং চাল পাচারের খবরে ইউএনও রুয়েল সাংমা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি পুলিশের কাছ থেকে লাঠি নিয়ে দুর্জয় নামে এক তরুণকে মারধর করেন। দুর্জয় বিষ্ণুপুর গ্রামের শহিদ মিয়ার ছেলে এবং পেশায় দিনমজুর।
মামলার বাদী রায়হান কবীর, মোবারকপুর গ্রামের প্রয়াত ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে, বলেন, “ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম। ইউএনও পুলিশের লাঠি নিয়ে দুর্জয়কে মারধর করেন এবং একপর্যায়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। আমরা তাকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তিনি নিরীহ নাগরিককে মারধর করতে পারেন না। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ সৃষ্টি হওয়ায় ছয়জন সাক্ষী ও মারধরের ভিডিও সংযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছি।”
ভুক্তভোগী দুর্জয় বলেন, “আমার মা অসুস্থ ছিলেন, তাই আমি ভিজিএফের চাল আনতে গিয়েছিলাম। লোকজনের ধাক্কাধাক্কিতে বাঁশের বেড়া ভেঙে পড়লে আমি সামনে গিয়ে পড়ে যাই। তখন ইউএনও স্যার আমাকে মারধর করেন। পরে বিকেল চারটা পর্যন্ত আটকে রেখে একটি কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে ছাড়া হয়। আমি কোনো লুটপাটের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না।”
অভিযোগের বিষয়ে ইউএনও রুয়েল সাংমা বলেন, “আমি কাউকে মারধর করিনি। এটি আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত। ঈদের সময় কিছু উচ্ছৃঙ্খল লোক ভিজিএফের মালামাল লুট করছিল। আমরা তাদের ধরি, তখন তারা উদ্ধত আচরণ করে। আমি আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য তাদের ক্যাপচার করেছি। পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় আমাকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। তবে কাউকে মারধর করা হয়নি।”
পিবিআই ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তার বলেন, “এ বিষয়ে শুনেছি, তবে আদালতের আদেশ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে পাইনি।” ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ জানান, রোববার এ বিষয়ে একটি ডাক ফাইল পাওয়া গেছে এবং তদন্ত চলছে।
Comments