Image description

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ি ইউনিয়নের আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামের হিন্দু পাড়ায় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে উসকানিমূলক মন্তব্য করার অভিযোগে গ্রেপ্তার সাংবাদিক হাবিবুর রহমান সেলিম-এর জামিন আবেদন বাতিল করে আদালত। সোমবার (৪ আগস্ট) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ কৃষ্ণ কমল রায় তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গংগাচড়া থানার ওসি আল ইমরান জানান, হিন্দু পাড়ায় হামলার ঘটনায় সাংবাদিকসহ এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত সেলিম তার ফেসবুক পেজে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনগণকে উত্তেজিত করার মতো তথ্য প্রচার করেছিলেন, যার প্রমাণ পাওয়া গেছে। গত শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে রংপুর সদরের হরিদেবপুর ইউনিয়নের গোকুলপুর চওড়াপাড়ায় নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করে সেনাবাহিনী। পরে গংগাচড়া থানায় সোপর্দ করা হয় এবং মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

জানা যায়, ফেসবুকে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগকে কেন্দ্র করে গত ২৯ জুলাই আলদাদপুর বালাপাড়ার হিন্দু পাড়ায় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা ভাঙচুর, লুটপাট ও হামলা চালায়। এতে অন্তত ১৫টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যাতে একজন কনস্টেবল গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় রবীন্দ্রনাথ রায় (৫৫) বাদী হয়ে ১ হাজার থেকে ১২০০ অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে গংগাচড়া মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি দণ্ডবিধির ১৪৯, ৪৪৭, ৪৪৮, ৩৩২, ৩৩৩, ৩৫৩, ৩৭৯, ৩৮০, ৪২৭ ও ৩৪ ধারায় রুজু করা হয়।

সূত্রমতে, গ্রেফতার সেলিম সাংবাদিকতার আড়ালে আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি হিন্দু পাড়ায় হামলার ঘটনায় জড়িত ছিলেন এবং জনগণকে উস্কানি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রংপুর সদর উপজেলার সাবেক সভাপতি, তারাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ছিলেন। বর্তমানে তিনি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য।

এছাড়া, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রংপুর সিটি বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডারদের দ্বারা ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় সেলিমের নেতৃত্বে শতাধিক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ সদস্য জড়িত ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই হামলায় সাজ্জাদ হোসেন, মুসলিম উদ্দিন মিলন, আব্দুল্লাহ আল তাহির ও মেরাজুল ইসলাম নিহত হন।

এছাড়া, সেলিমের বিরুদ্ধে কোতয়ালী সদর থানায় নিরপরাধ ছাত্র-জনতার নামে মামলার ভয় দেখিয়ে হয়রানি ও চাঁদাবাজির অভিযোগও রয়েছে, যা পুলিশ তদন্ত করছে।