আনন্দমোহনের অধ্যক্ষ ওএসডি, শিক্ষক শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস-মিষ্টি বিতরণ

ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী আনন্দ মোহন কলেজের বিতর্কিত অধ্যক্ষ ও বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের নেতা মো: আমান উল্লাহকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ খবরে উচ্ছ্বাসিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আনন্দ প্রকাশ করে মিষ্টি বিতরণ করেন।
সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুর ৩টায় কলেজটির অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রফেসর মো: সাকির হোসেনকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে এই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা হয়।
এ সময় শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিসিএস সাধারন শিক্ষা সমিতি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম আহবায়ক প্রফেসর মো: ইদ্রিস আলী বলেন, শিক্ষা মন্ত্রালয়ের এই আদেশের মধ্যদিয়ে আনন্দমোহন কলেজ ফ্যাসিস্ট মুক্ত হয়েছে। আশা করছি বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রতিষ্ঠানের সুনাম অক্ষুন্ন রেখে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৌহাদ্যপূর্ন পরিবেশ সৃষ্টি করবে।
এর আগে কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মিষ্টি বিতরণ করেন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সাধারণ শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র জানায়, গত ৩১ জুলাই এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে মো: আমান উল্লাহকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করা হয়। তবে গতকাল ৩ আগস্ট এই চিঠি হাতে পায় কলেজ কর্তপক্ষ। ওই আদেশে অধ্যাপক সাকির হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, অধ্যক্ষ আমান উল্লাহর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে নানা অভিযোগ নিয়ে অসন্তোষ চলছিল। তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থক এবং বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের একজন প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি তার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন।
কলেজের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খান মোহাম্মদ লুৎফুল কবির জানান, জ্যেষ্ঠ ও যোগ্য শিক্ষকদের বাদ দিয়ে বিগত সময়ে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অধ্যক্ষের পদ লাভ, করোনাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ ও পিকনিকের টাকা আত্মসাৎ, প্রশাসনিক কাজে নিয়ম ভঙ্গ করে অনুসারীদের প্রাধান্য দেওয়া এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে ছাত্রলীগ কর্মীদের লেলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে প্রফেসর আমান উল্লাহর বিরুদ্ধে।
তবে অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রফেসর আমান উল্লাহ বলেন, সরকারি আদেশ মেনে আমি দায়িত্ব হস্থান্তর করেছি। এসব নিয়ে আমি কোন কথা বলতে চাই না।
এবিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর মো: সাকির হোসেন বলেন, আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। চেষ্টা করব শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে। এখন থেকে এই প্রতিষ্ঠানে কোন ধরনের বৈষম্য থাকবে না।
Comments