
বছরখানেক আগেও চট্টগ্রামের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে সংঘাতে জড়াতেন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাতারাতি বদলে যায় হাওয়া। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ এখন উধাও। এ পরিস্থিতিতে বন্দরনগরীর বিভিন্ন ক্যাম্পাস দখলে নিতে মরিয়া ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম কলেজ, হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিটি কলেজ, কমার্স কলেজ, ইসলামিয়া কলেজসহ আরও কয়েকটি ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া ছাত্র সংগঠন দুটি। প্রকাশ্যে সহাবস্থানের রাজনীতির কথা বলা হলেও বাস্তবে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংগঠন দুটি একে অপরের শত্রু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির এরই মধ্যে সংঘর্ষেও জড়িয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার ‘শিক্ষাকেন্দ্র’ হিসেবে পরিচিত। এ এলাকায় রাস্তার এক পাশে সরকারি চট্টগ্রাম কলেজ, অন্য পাশে হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ। শুধু এ দুটি কলেজে কমবেশি ৩০ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছেন। এ ছাড়া চকবাজারের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী রয়েছেন লাখের কাছাকাছি। ফলে ছাত্র রাজনীতিতে সব সময় সরগরম এলাকাটি। এর মধ্যে সব ছাত্র সংগঠনের চোখ থাকে চট্টগ্রাম কলেজ ও হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের দিকে। চকবাজার এলাকায় রয়েছে অনেক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। ফলে এই দুটি কলেজে যে সংগঠনের আধিপত্য থাকে, তারাই এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চাঁদাবাজি করে।
জানা যায়, চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের নিয়ন্ত্রণ নিয়েও ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। গত ২১ নভেম্বর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। ২০০৯ সাল থেকে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্রাবাস বন্ধ ছিল। ১৬ বছর পর হলের আসন বরাদ্দের তালিকা প্রকাশ করে পলিটেকনিক কর্তৃপক্ষ। এর পর হলে প্রবেশ নিয়ে দুই সংগঠনের নেতাকর্মীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এভাবে আরও কয়েকটি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে মুখোমুখি অবস্থানে চলে গেছে সংগঠন দুটি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে ছাত্রশিবির। বিশেষ করে ছাত্রদের ৯টি আবাসিক হলে ইতোমধ্যে কমিটিও গঠন করেছে সংগঠনটি। ছাত্রদলের পাঁচজনের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হলেও নিজেদের মধ্যে অন্তর্কোন্দলের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আধিপত্য তৈরি করতে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে।
Comments