Image description

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, কোন চাঁদাবাজ দখলদার কেউ বিএনপির নতুন সদস্য পদ পাবে না। সামনে আমাদের কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে। জুলাই এর পর মানুষ যে আস্তা নিয়ে পথ চলতে চেয়েছিল, যারা স্বাধীন ভাবে পথ চলতে চায় তাদের জন্য কঠিন অবস্থা। যারা দীর্ঘ ১৬ বছর রাজপথে ছিল হাসিনা সরকার তাদের কারাগারে পাঠিয়েছে। তাদেরকে স্ত্রী সন্তানদের কাছে থাকতে দেয় নাই। হাসিনার আমল ছিল গুম খুনের আমল। ১৬ বছরের শাসনামল ছিল হায়েনার আমল। 

বৃহষ্পতিবার (১৭ জুলাই) নতুন সদস্য সংগ্রহ ও সদস্য নবায়ন কর্মসূচী এবং দেশ ও গণতন্ত্র বিরোধী অপশক্তি দ্বারা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অশালীন প্রচারনার প্রতিবাদে ঢাকার ধামরাইয়ে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, যারা দেশ নিয়ে গণতন্ত্র নিয়ে  কথা বলতো তাদের লাশ বুড়িগঙ্গা নদীতে হয়তোবা  শীতলক্ষ্যা নদীতে পাওয়া যেত। বাকশালি সরকার ছিল। কারও কোন স্বাধীনতা ছিল  না। হাসিনার ফ্যাসিষ্ট সরকার পতনে  রিকশা চালক, দিন মজুর, ছাত্র, জনতা, মাছুম বাচ্চারা পর্যন্ত মাঠে নামেন। গুলি করে হত্যা করা হয়েছে শত শত ছাত্র জনতারকে। অবুঝ শিশুও বাদ পড়ে নি। প্রাইমারী স্কুলের ছাত্র, হাইস্কুলের ছাত্রকে গুলি করে মারা হয়েছে। আমরা আবু সাইদ, মুগ্ধ, চট্টগ্রামের ওয়াসিম আকরামের মতো দেশ প্রেমিকদের ভুলে যেতে পারি না। যাদেরকে রাজপথে ফ্যাসিষ্ট হাসিনা সরকারের নির্দেশে গুলি করে মারা হয়েছে। সাধারণ জনগণের উপর পুলিশ বাহিনীকে গুলি করার নির্দেশ দেন ফ্যাসিষ্ট হাসিনা। যা বিবিসর জরিপে পাওয়া যায়, যার কল রেকর্ড ফেইসবুক এ প্রকাশ  পায়। এই কল রেকর্ড এডিট করা নয়। 

রিজবী আরো বলেন,  এক ফ্যাসিবাদকে আন্দোলন করে দেশ থেকে বিতারিত করা হয়েছে আরেক ফ্যানিবাদের জন্ম হয়েছে। জামাত এনসিপি চাচ্ছে দেশে নির্বাচন না দিতে।  আরো ৪/৫ বছর যেন কোন নির্বাচন না হয়। নির্বাচন না হলে দেশের গণতন্ত্র রক্ষা করা সম্ভব নয়। জনগণ তাদের আস্থা হারাবে। বর্তমান সরকারকে আমরা সমর্থন করি। যতটুকু সংষ্কার করা দরকার করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিক।

দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে তিনি আরো বলেন, যে জেলখানা সরকারিভাবে পরিত্যক্ত করা হয়েছিল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সেখানে রাখা হয়েছিল। বিনা কারণে ৬ টি বছর কারগারে বন্দী করে রেখেছিল হাসিনার স্বৈরাচারী সরকার। কারাগারে বেগম জিয়া অসুস্থ হলে  তাকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করার জন্য বলা হলেও হাসিনা সরকার কোন প্রকার সুযোগ দেন নি। গুম, খুনই ছিল তার একমাত্র লক্ষ। 

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে বলেন, এই দেশের সংবিধানে আল্লাহর নাম সংযুক্ত করেছিলেন মেজর জিয়াউর রহমান, সংবিধানে বিসমিল্লাহর রহমানির রাহীম সংযুক্ত করেছিলেন জিয়াউর রহমান। 

জামাত শিবির সম্পর্কে রুহুল কবির রিজভী বলেন, পায়ের রগ কাটে কারা আপনারা তা জানেন। ৭১ সালে যুদ্ধঅপরাধী ছিল কারা তাও আপনারা জানেন। তাদেরও এদেশে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিল জিয়াউর রহমান। সকলকে নিয়ে থাকাটা তিনি পছন্দ করতেন। আজ তারা আগামীর রাষ্ট্র নায়ক তারেক রহমান ও তার পরিবারকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন। যারা এমন কথা বলেন তাদের কোন ভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। বিএনপিকে কখনো কোন ষড়ষন্ত্র ধমিয়ে রাখতে পারে নি। কোন চাঁদাবাজ, দখলবাজ কেউ দলের সদস্য হতে পারবে না। আমরা ভদ্র, ভালো লোককে বিএনপিতে সুযোগ করে দিবো।

এনসিপি সম্পর্কে তিনি আরো বলেন, আপনারা অন্যের কথায় কোন কাজ করবেন না। সঠিক ভাবে কাজ করেন। তাহলে গণতন্ত্র রক্ষা পাবে। আমরাও তাদের দলকে সমর্থন করি। তারা আমাদের ছোট ভাই। আবু সাইদ, মুগ্ধ, ওয়াসিম আকরামদের রক্তের দাম দিতে হবে। 

রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপি একটি সুষ্ঠু সুশৃঙ্খল রাজনৈতিক দল। আগামী নির্বাচনে জনগণের ভোটে, জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করবে। দেশের একমাত্র উন্নয়নে বিএনপি কাজ করে যাচ্ছে। 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, ধামরাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব তমিজ উদ্দিন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য খন্দকার আবু আশফাক। পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আতিকুজ্জামান স্বপন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, বিএনপির প্রাথমিক সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কমিটির সদস্য গোলাম মওলা শাহীন ও মুশফিকুর রহমান লেলিন, ধামরাই উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম, পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আতিকুর রহমানসহ একাধিক নেতৃবৃন্দ। উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সকল নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।